ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী হত্যার রেশ না কাটতেই এবার চাঁদপুরে আরেক মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তার নাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছেন। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ক্লাস বর্জন করেছেন তারা। শুক্রবারও ওই অধ্যক্ষের বিচার ও অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। জেলা শাহরাস্তির ভোলদিঘী কামিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
যৌন নির্যাতনের শিকার ওই মাদ্রাসার শিক্ষিকা বলেন, ‘অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন সব সময় আমাকে দেখলে খারাপ অঙ্গভঙ্গিসহ অশোভন আচরণ করেন। দীর্ঘদিন নীরবে তার নির্যাতন সহ্য করেছি। আজ তিনি বেশি বাড়াবাড়ি করেছেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদেরও অভিযোগের শেষ নেই। তার ব্যাপারে ইতোপূর্বে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন। তারপরেও তার চরিত্র বদলায়নি।’
শিক্ষার্থীরা জানান, ‘অধ্যক্ষ একই মাদ্রাসার এক প্রভাষককে (পদার্থ বিজ্ঞান) বিভিন্ন অশোভন আচরণ করেন। শুধু আজই নয়, কয়েক দিন যাবত তিনি ওই শিক্ষিকাকে বিভিন্ন ধরনের অশোভন অঙ্গভঙ্গি করে আসছেন। এ ঘটনাটি প্রকাশ পেলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।’
একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী কবির হোসেন জানান, ‘আমাদের প্রিন্সিপাল হুজুর আগেও ছাত্রীদের সাথে বিভিন্ন অশোভন আচরণ করেছেন। এ জন্য তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল হয়েছে। তারপরেও অসভ্য অধ্যক্ষ তার চেয়ারে বহাল তবিয়তেই আছেন।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা রিমা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় কারো কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ভিকটিমের কথা শুনেছি। তার কাছ থেকে এবং মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। ভিকটিম বলেছেন- সে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেবেন। এছাড়া আমরা অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম মোতাবেক ব্যবস্থা নেব। শনিবার আমরা সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।’
শাহরাস্তি থানার ওসি জানান, ‘অধ্যক্ষ একই মাদ্রাসার শিক্ষিকার সাথে অশোভন আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করেছেন। এমন খবর শুনে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।’