বুধবার (২০ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কর্মসূচি শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে পাশের টিএসসিতে যেতে থাকে। এসময় প্রধান ফটকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো গ- ১৭৯৫৬৩) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমা আক্তার (১০ম ব্যাচ) ও আয়শা মোমেনাকে (১৪তম ব্যাচ) ধাক্কা দেয়। গাড়ির ধাক্কায় ইমা আক্তার দূরে ছিটকে পড়ে। কিন্তু আয়েশা মোমেনা গাড়ির ধাক্কায় গাড়ির সামনে পড়লেও আবার তার পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ির চাকা তুলে দেয়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ওই শিক্ষক নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা গাড়িটি আটক করে আহত আয়শাকে শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু ওই শিক্ষক তাতে রাজি না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে গাড়ি গাড়িটি নিয়ে চলে যান তিনি। পরে আয়েশাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও পরে অ্যাপালো হাসপাতালে নেয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থী ইমা আক্তার বলেন, আমরা দুইজন ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় একটি প্রাইভেট কারটি আমাদের ধাক্কা দেয়। আমি দূরে ছিটকে পড়লেও আয়েশার ওপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দেয়। পরে আহত আয়েশাকে ওই শিক্ষকের গাড়িতে নিতে চাইলে তিনি রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড.নূর মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তিনটি দাবির মধ্যে দ্বিতীয় ফটকের সামনের লেগুনাস্ট্যান্ড তুলে দেয়া হয়েছে। বাকি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আর আহত শিক্ষার্থী আয়েশাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আয়েশার চিকিৎসাভার শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন নিজে নিয়েছেন।
আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ব্রেক করলেও তাতে কাজ না করায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আমি আহত শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আর আমি তাকে গাড়িতে নিতে চাই। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভুলবোঝাবুঝির কারণে কিছু শিক্ষার্থী আমার গাড়িতে হামলা চালায়।
এদিকে, রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার (২০ মার্চ) সকাল নয়টা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার অবরোধ করে আন্দোলন শুরু হয়। এসময় তারা প্রগতি সরণির ঘটনায় জড়িত বাস চালকের শাস্তি, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্পিড ব্রেকার নির্মাণসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের ডাবল ট্রিপ চালু, প্রধান ফটকের সামনে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক থেকে লেগুনা স্টান্ডের দাবি জানায়।