সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন হবিগঞ্জের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এর জেরে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন বানিয়াচং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম।

 

এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে অনেকেই বলছেন, অবিলম্বে ওই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে ওই কর্মকর্তার দুর্নীতি বের করতে হবে। প্রতিবাদ জানাচ্ছে সাংবাদিক সমাজও। ইতোমধ্যেই মামলা প্রত্যাহারে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।

গত ১৫ মার্চ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম। এতে আসামি করা হয়, মাছরাঙা টেলিভিশনের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি চৌধুরী মো. মাসুদ আলী ফরহাদ ও বাংলানিউজের ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বদরুল আলমসহ আরও কয়েকজনকে। মামলাটি তদন্তের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠিয়েছেন আদালত।

মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম এক কর্মস্থলে টানা দীর্ঘদিন চাকরির সুবাধে বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন, এমন অভিযোগ এনে এবং প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে স্থানীয় লোকজন। এর সূত্র ধরে বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেন আলম। কিন্তু এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে উল্লিখিত দুই সাংবাদিককে জড়িয়ে মামলা দায়ের করেন।

মৎস্য কর্মকর্তার মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে শনিবার (২৭ জুন) মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে। এ দিন বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সর্বস্তরের সাংবাদিকদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সাংবাদিক ফোরমের সভাপতি মো. এমদাদুল ইসলাম সোহেল  বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মৎস্য কর্মকর্তার দায়ের করা মামলাটির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেব।

হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাসেল চৌধুরী  বলেন, অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন  বলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতেও আলোচনা হয়েছে। বাক-স্বাধীনতা রোধ ও সাংবাদিকদের হয়রানি করার উদ্দেশে মৎস্য কর্মকর্তা এই মামলা দায়ের করেছেন বলে আমরা মনে করি। অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

বাংলা নিউজ

মন্তব্য করুন