প্রায় তিন মাস হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর হার মানলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আরিফ রায়হান দীপ, হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির বিরোধিতা করার জেরে যাকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, ২ জুলাই মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে দীপের মৃত্যু হয়।
যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দীপ ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল নজরুল ইসলাম হলে তার ওপর হামলা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত ১৭ এপ্রিল মেজবাহউদ্দীন নামে বুয়েটেরই আরেক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। মেজবাহ বুয়েটের স্থাপত্য প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। মেজবাহ হেফাজত সমর্থক বলেও পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন।
গত ৫ এপ্রিল রাতে শহীদ স্মৃতি হলের মসজিদের ইমাম হলের বাবুর্চিদের দিয়ে খিচুড়ি রান্না করিয়ে মতিঝিলে অবস্থানরত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের জন্য পাঠান, তখন দীপসহ কয়েক শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদ করেন।
ওই রাতেই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পরিচালক দেলোয়ার হোসেনকে জানান। পরে ইমাম আব্দুল আলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
বুয়েট ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আমিনুল হক পলাশ বলেন, “ইমাম বরখাস্ত হওয়ার পর থেকেই বুয়েট শিক্ষার্থীদের একটি ফেসবুক গ্রুপ ‘বুয়েটিয়ান’ এ কিছু শিক্ষার্থী দীপকে নিয়ে আজেবাজে লেখালেখি শুরু করে।
“ইমামের বরখাস্তের পিছনে দীপের হাত রয়েছে বলেও প্রচার চালাতে থাকে তারা।”
এ সময় অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে দীপকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় বলেও জানান তিনি।
এরই এক পর্যায়ে ৯ এপ্রিল সকালে নজরুল ইসলাম হলের ছাত্র দীপকে হলে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে মাথায় ও পিঠে গুরুতর জখম হন দীপ।
তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সকালে দীপের লাশ বুয়েট ক্যাম্পাসে নেয়া হয়। বেলা ১০টার দিকে এম এ রশিদ ভবনের সামনে তার প্রথম জানাযা হয়।
জানাযায় বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে দীপের বাবাও উপস্থিত ছিলেন। জানাযার পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে পাঠানো হয়।