জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় গত রবিবার ভোররাত থেকে একটি কওমি মাদরাসার শিশু তিন ছাত্রী নিখোঁজ হওয়া নিয়ে সেখানে তোলপাড় চলছে। উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় সভুকুড়া দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদরাসা থেকে তিন ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মাদরাসাটির চারজন শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নিখোঁজ তিনছাত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসলামপুরের গোয়ালেরচর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় দারুত তাকওয়া মহিলা কওমি মাদরাসাটিতে আবাসিক ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে আটজন শিক্ষক পাঠদান করান। মাদরাসার মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামান পরিবার পরিজন নিয়ে মাদরাসার ভেতরে একটি কক্ষে বসবাস করেন। সাইনবোর্ড সর্বস্ব এই মাদরাসাটি ২০২০ সাল থেকে পরিচালনা করে আসছেন মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামান। ওই মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির তিন ছাত্রী গত রবিবার ভোররাত থেকে নিখোঁজ রয়েছে।
তিন ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ওই মাদরাসার মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামান তাদের পরিবারকে জানান যে, রবিবার ভোর রাতে ছাত্রীদের ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে জাগানো হয়। অন্যান্যদের মতোই দ্বিতীয় শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীও নামাজের প্রস্তুতি নেয়। নামাজের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর একদিন পর গতকাল সোমবার বিকেলে তিনি নিজেই বাদী হয়ে তার তিন ছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ইসলামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
অপরদিকে নিখোঁজ তিন ছাত্রী তাদের বাড়িতে বা মাদরাসায় ফিরে না আসায় তাদের স্বজনদের মাঝে উৎকণ্ঠা ও নানান শঙ্কা বিরাজ করছে। খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে ওই শিশুদের বাবা-মা ইসলামপুর থানায় গিয়ে মোখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার রাতেই ইসলামপুর থানা পুলিশ ওই মাদরাসা থেকে মাদরাসাটির মুহতামিম মো. আসাদুজ্জামান, সহকারী শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন, রাবেয়া আক্তার ও শুকরিয়া আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে তিন শিশু নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। তাদেরকে থানা হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে নিখোঁজ তিন ছাত্রীর কোনো অভিভাবক এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি বা মামলা দায়ের করেননি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সুমন মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, নিখোঁজ তিন শিশুছাত্রীর বিষয়ে তাদের অভিভাকরা থানায় এখনো লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ করেননি। তবে এক সঙ্গে তিনছাত্রী নিখোঁজ থাকার ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তাদের সন্ধানে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।