কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জের হলুদিয়া গ্রামে সন্ত্রাসীরা গত শুক্রবার ভোররাতে চারটি সংখ্যালঘু পরিবারের ১০টি ঘর আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আগুনে সবকিছু পুড়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্থরা ভয়ে গতকাল শনিবার পর্যন্ত কোনো মামলা করেননি। জিডির সূত্র ধরে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। তবে কেউ মুখ খুলছে না। ক্ষতিগ্রস্থ ব্রজেন্দ্র চন্দ্র ভৌমিক ও বিমল চন্দ্র ভৌমিকের বরাত দিয়ে কুমিল্লা অফিস জানায়, গত শুক্রবার ভোররাত প্রায় পৌনে ৪টায় হঠাৎ দু তিনটি ককটেল বিষ্ফোরণের শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে তারা দেখেন দুটি গোয়ালঘরের পেছনে আগুন জ্বলছে। তারা চিৎকার করে ঘুমন্ত লোকদের ঘর থেকে বের করতে করতেই মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ১০টি ঘরেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে চারটি পরিবারের কেউ ঘর থেকে কোনো মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি। আগুনে ঘরে থাকা ধান-চাল, নগদ টাকা, হাঁস-মুরগি, স্বর্ণালঙ্কার সবই পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ১৬ লাখ টাকা। গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলোতে শুধু ছাই ও কয়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। গতকাল দুপুরে ঘটনা তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা লাকসাম থানার সহকারী দারোগা আবুল কাসেম জানান, এ অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় জিডি করার পরই তারা ঘটনা জানতে পেরেছেন। সূত্র জানায়, অগ্নিকাণ্ডের পরপর তিনজন সন্ত্রাসীকে কেউ কেউ পালিয়ে যেতে দেখলেও এখন তারা ভয়ে মুখ খুলছেন না। একই কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা মামলা করতেও রাজি নন। এদিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া ও ছিদ্দিকুর রহমান মেম্বার জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের কোনো পারিবারিক শত্রু নেই। এরা রাজনীতিতেও জড়িত নন। তারা জানান, তবে আগুন যে বাইরে থেকে লাগানো হয়েছে এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এদিকে গতকাল দুপুরে স্থানীয় সাংসদ কর্ণেল (অবঃ) আনোয়ারুল আজিম এবং কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মনিরুজ্জামানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রথম আলো, ৫ মে ২০০২