রবিবার সকালে শহরের বাণিজ্যিক এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ত্রাস সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি করতে গেলে ছাত্রদলের সিটি সেলিম গ্রুপের ক্যাডার ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মিজানকে জনতা আটক করে ধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনার সময় সন্ত্রাসী মিজানের ছুরিকাঘাতে প্রতিষ্ঠানের মালিক এডভোকেট প্রবাল মোদক (৩৭) আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব দুর্ধর্ষ ক্যাডার এনামুল হক সেলিম ওরফে সিটি সেলিম গ্রুপের ক্যাডার মিজান অস্ত্রধারী কয়েক সহযোগীকে নিয়ে ঐ এলাকার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মোদক ফার্মেসিতে ওষুধ কেনার নামে প্রবেশ করে, এর পরপরই মিজান দাঁতের ব্যথার ওষুধ হাতে নিয়ে হঠাৎ অস্ত্র উঁচিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু দোকান মালিক ও কর্মচারীরা চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে মিজান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মিজান চাঁদার টাকা ঐ দিনের মধ্যে না দিলে দোকানের মালিক প্রবাল মোদককে গুলি করে বুক ঝাঁঝরা করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময়ে দোকানে আগত ক্রেতা ও মালিক-কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মিজানকে ধরে ফেলে। ফলে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এই ফাঁকে মিজান এডভোকেট প্রবাল মোদককে ছুরিকাঘাত করলে তিনি আহত হন, ফলে উত্তেজিত জনতা মিজানকে বেদম প্রহার করে এবং পুলিশে খবর পাঠায়। খবর পেয়ে সদর থানার এসআই নাজিম উদ্দিন আহমেদ ও এএসআই নুরুল ইসলাম গাজী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ পরে মিজানকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে উপস্থিত ক্যাডাররা বাধা সৃষ্টি করে। ফলে মিজানকে ফার্মেসির অভ্যন্তরে বসিয়ে রাখা হয়। পরবর্তীতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসআই আবুল হাশেম আরও ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রদল ক্যাডার মিজানকে একটি ছোরাসহ কড়া নিরাপত্তায় সদর থানায় নিয়ে আসে। এর পরপরই মিজানকে ছাড়িয়ে নিতে শ্রমিক দলের জনৈক নেতাসহ ক্ষমতাসীন দলের লোকজন থানায় তদ্বির চালায়। কিন্তু দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মিজানের বিরুদ্ধে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম জাক্কুর দায়েরকৃত মামলাসহ শহরের বিভিন্ন ব্যক্তির দায়েরকৃত একাধিক মামলা ও গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় পুলিশ তাকে ছাড়ার কোন সুযোগ পায়নি। এদিকে সন্ত্রাসী মিজানকে পুলিশ নিয়ে আসার পরপরই প্রতিষ্ঠানটির মালিক এডভোকেট প্রবাল মোদককে ছাত্রদল ক্যাডাররা মামলা না করার হুমকি দিয়েছে। ফলে তিনি এখন মামলা দিতে ভয় পাচ্ছেন। তবে পুলিশ ইতোমধ্যে মিজানকে একাধিক মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী দেখিয়ে কোর্টে চালান করে দিয়েছে।
দৈনিক জনকণ্ঠ, ১০ জুন ২০০২