মাদ্রাসাপড়ুয়া ছেলেকে দেখতে এসেছিলেন মা। বিদায়ের সময় মায়ের পেছন পেছন ছুট দিয়েছিল শিশুটি। সেই ‘অপরাধে’ তাকে বেধড়ক পেটান শিক্ষক।
তবে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এক মাদ্রাসায় ওই ঘটনার পর শিক্ষককে আটক করা হলেও শিশুটির অভিভাবকের আবেদনে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
হাটহাজারী পৌরসভার কনক কমিউনিটি সেন্টারের পাশে আল মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমি নামের মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থী ওই শিশুকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
মারধরের একটি ভিডিও রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিকালে ওই শিশুর মা মাদ্রাসায় তার সন্তানকে দেখতে যান। সাড়ে পাঁচটার দিকে সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় সাড়ে আট বছর বয়সী শিশুটি মায়ের পেছন পেছন দৌড়ে যায়।
সে সময় শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া তার ঘাড় ধরে মাদ্রাসার ভেতর নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন উল্লেখ করে রুহুল আমিন বলেন, “গভীর রাতে আমি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খবরটি জানতে পেরে পুলিশ নিয়ে আল মারকাযুল মাদ্রাসায় অভিযান যাই এবং শিশুটিকে উদ্ধার করি। শিক্ষক ইয়াহিয়াকে আটক করে নিয়ে আসি।
রাতেই ওই শিশুর পরিবারকে খবর দিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
তবে শিশুটির মা ইউএনওকে লিখিতভাবে জানান, তিনি এ ঘটনায ‘ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত’ হয়েছেন, তবে শিশুর ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন না।
ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মাদ্রাসা শিক্ষক ইয়াহিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
১০ মার্চ বুধবার ওই শিশুর জন্মদিনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু খেলনা দিয়ে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ওই শিশুকে উদ্ধার করে তার বাবা-মায়ের কাছে দেওয়া হলেও শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
তবে ওই শিক্ষককে ডেকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাকে জিজ্ঞেস করা হবে কেন শিশুকে পেটানো হল। পরবর্তীতে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।”
আল মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমিতে দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানা গেছে।