সারা দেশের বিএনপি ও চারদলের সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত হাজার হাজার সংখ্যালঘু প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে। নির্বাচনের পর এ ধরনের আতঙ্কিত কয়েক হাজার মানুষ বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গতকাল থেকে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গতকাল প্রথম দিনেই এই আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সেখানে তাদের খাওয়া-দাওয়া ও রাত যাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এধরনের পরিস্থিতির শিকার আরো প্রায় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ঢাকার বিভিন্ন বস্তি, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত নির্বাচনের রাত থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। বিএনপি ও জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে তারা অভিযোগ করেছে। সন্ত্রাসীরা নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে একদিকে যেমন মারধোর করে আহত করেছে, তেমনি ভাংচুর ও লুটপাটও হচ্ছে সর্বত্র। কোথাও কোথাও সংখ্যালঘু পরিবারের তরুণী ও যুবতী মেয়েদের জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এদের দু’একজনকে ফেরত দেয়া হলেও অধিকাংশ নির্যাতিত মেয়েদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর পরিচালিত সন্ত্রাসী ও বর্বর হামলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মুন্সিগঞ্জের শ্রীপুর থানার ঋষিপাড়া থেকে পালিয়ে এসেছে ফালানী দাস (৫০), জোসনা রাণী (৩৫), পুষ্প (৩০), পিয়া দাসী (৪৫) এবং ভাসানী রাণী (২৮)। তারা সকলেই স্বল্প আয়ের পরিবারের গৃহিনী। সংখ্যালঘু হওয়ার অপরাধে নির্বাচনের পরের দিন থেকেই একেক সময়ে একেকভাবে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছে।
আজকের কাগজ, ১৪ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন