কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় মুসলমান ভুমিদস্যুরা দিনে-দুপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি পরিবারের জমি দখল করে নিয়েছে। এ সময় ভুমিদস্যুদের হামলায় তিনজন নারী আহত হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩ এপ্রিল শনিবারের এ ঘটনায় পাকুন্দিয়া থানায় একটি মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, উপজেলার এগারোসিন্দুর ইউনিয়নের তালদর্শী গ্রামের সুরেন্দ্র চন্দ্র দে তালদর্শী মৌজার ২৪৯নম্বর খতিয়ানের ৭৪৪, ৭৫৮ ও ৮৯৬ দাগের ১৫৮ শতাংশ জায়গা ভোগদখল করে আসছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী রেনু বালাকে কয়েকটি শর্তে ওই জমিটুকু উইল করে দেন। উইলের চার নম্বর শর্তে বলা আছে, রেনু বালা জীবিত অবস্থায় এই জমি কোনো প্রকার হস্তান্তর বা বিক্রয় করতে পারবে না। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৮২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চরখামা গ্রামের কুতুব উদ্দীনের তিন ছেলে মাজহারুল হক পাঠান, আমিনুল হক পাঠান ও মামুন পাঠান কৌশলে রেনু বালার কাছ থেকে ৮৯৬ দাগের ৪৯ শতাংশ জমি লিখে নেন।
উইলের শর্ত উপেক্ষা করে জমি লিখে নেওয়ায় এ বিষয়ে রেনু বালার নাতি ও অজিত চন্দ্র দের ছেলে অশোক কুমার দে ২০১৯ সালে কিশোরগঞ্জ আদালতে সত্ত্বের ঘোষণামূলক মামলা করেন। এর জেরে ৩ এপ্রিল শনিবার সকাল ৯টার দিকে ভুমিদস্যুরা ৫০-৬০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিরোধপূর্ণ ওই জমিটি দখল করে নিয়ে যান। পরে ওই জমির চারপাশে কাটাতারের বেড়া নির্মাণ করেন। এতে বাধা দিতে গেলে অশোক কুমার দের মা ঝর্ণা রাণী দে, স্ত্রী প্রিয়তি রানী দে ও বোন সীমা রাণী দেকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। পরে বসতঘরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
ভুক্তভোগী অশোক কুমার দে বলেন, উইলের শর্ত উপেক্ষা করে এরা কৌশলে আমার ঠাকুরদির কাছ থেকে ৪৯ শতাংশ জমি লিখে নেয়। এ নিয়ে আমি ২০১৯ সালে স্বত্বের ঘোষণামূলক ও ২০২০ সালে রিভিউ মামলা করেছি। মামলা দুটি চলমান থাকলেও কুতুব উদ্দীন পাঠানের ছেলেরা দলবল নিয়ে আমার এই জমি জবরদখল করে নিয়েছে। আমাদের নিরীহ পেয়ে আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এ ছাড়াও বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কুতুব উদ্দীনের ছেলে মামুন পাঠান বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের কেনা সম্পত্তি দখল করে এতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি। আমাদের কাছে ওই জমির বৈধ কাগজপত্র রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাকুন্দিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় অশোক কুমার দে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।