কোটালীপাড়ার রামশীল ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় গ্রহণকারী হাজার হাজার নির্যাতিত সংখ্যালঘু নারী-পুরুষকে আজ শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক আশ্রিত এসব লোকদেরকে নিরাপদে বরিশাল জেলাপ্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করবেন। এ সময় দুই জেলার পুলিশসুপারগণ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। বাড়ি ফেরা কর্মসূচিকে সফল করতে ইতিমধ্যে জেলাপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন ঐসব নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষদেরকে অভয়দান অব্যাহত রেখেছেন এবং বোঝাতে চেষ্টা করছেন তারা তাদের বাড়িতে ফিরে গেলে প্রশাসন তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে যদিও ঘরছাড়া এসব নারী-পুরুষের শঙ্কা এখনও কাটেনি। তাদের ধারণা, এখনো বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তারা বাড়ি ফিরে গেলে নতুন করে হামলার শিকার হতে পারে বলে তাদের ধারনা। এ ব্যাপারে অনেকের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানায়, তারা নিজ বাড়িতে ফেরার পরিবর্তে দেশ ত্যাগের চিন্তাভাবনা করছেন। এদিকে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যেগে আ. লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃত্ববৃন্দ অভিযোগ করেন যে, চারদলীয় জোটের সন্ত্রাসীদের আক্রমণে টিকতে না পেরে গোপালগঞ্জ জেলার পার্শ্ববর্তী ৫টি জেলার অন্ততপক্ষে ১৫ হাজার আ. লীগ নেতা কর্মী ও সমর্থক এবং সংখ্যালঘু নারী-পুরুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে প্রাণ ভয়ে গোপালগঞ্জে এসে আশ্রয় নিয়েছে। নেতৃত্ববৃন্দ বলেন, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, পিরোজপুর, নাজিরপুর, বাগেরহাটের মোল্লাহাট, চিতলমারী, কচুয়া মোড়েলগঞ্জ, বাগেরহাট সদর, ফরিদপুরের নগরকান্দা এবং নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা থেকে আগত নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া, রামশীল, শুয়াগ্রাম, বান্দাবাড়ি, কান্দি, সাদুল্লাপুর, কলাবাড়ি, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া, গোপালপুর, পাটগাতী, বর্ণি কুশলী প্রভৃতি ইউনিয়নে এবং গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেন, আক্রান্ত ঐসব এলাকায় গত কয়েকদিনে প্রকাশ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় কিশোরী ও অবিবাহিত-বিবাহিত মেয়ে ও মহিলারা ব্যাপক হারে এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থান হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

ভোরের কাগজ, ১২ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন