গলাচিপায় সংখ্যালঘু পরিবারের এক গৃহবধূ দ্বিতীয়বার ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রভাবশালী এক ইউপি মেম্বারের পুরুষাঙ্গ কর্তন করেছে। গলাচিপা থেকে নিজস্ সংবাদদাতা জানান, দ্বিতীয়বার ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংখালঘু পরিবারের সুন্দরী গৃহবধূ লক্ষ্মীরানী মজুমদার প্রভাবশালী লম্পট ইউপি মেম্বার মোসলেম গাজীর পুরুষাঙ্গ কর্তন করেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষকের ক্যাডার বাহিনী গৃহবধূকে বেধড়ক পিটিয়েছে। তার বাড়িঘর ভাংচুর ও মালামাল লুট করেছে। কর্তিত পুরুষাঙ্গ নিয়ে মোসলেম গাজী অজ্ঞাত স্থানে রয়েছে। গলাচিপার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরআগি গ্রামে রবিবার রাত ১০ টায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার সময়ে লক্ষ্মীরাণী মজুমদারের (৪০) স্বামী সুধীর মজুমদার পটুয়াখালী শহরে ছিল। ঘরের দরজা খোলা থাকার সুযোগে এক ফাঁকে লম্পট মোসলেম গাজী (৪৫) ঘরে ঢুকে পড়ে এবং বিছানায় ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। লক্ষ্মী রাণী মজুমদার ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মোসলেম গাজীর পুরুষাঙ্গে ব্লেড দিয়ে দু’টি পোচ দেয়। মুহূর্তে পুরো বিছানা রক্তে ভেসে যায়। মোসলেম গাজী তার জামা, জুতা ও টর্চলাইট ঘটনাস্থলে ফেলে ঘরের বাইরে এসে চিৎকার শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে তার ক্যাডার বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং লক্ষ্মীরানীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে। নগদ টাকাসহ ঘরের মালামাল লুট করে। ক্যাডাররা তার দু’টি অবুঝ সন্তানসহ বাড়ির অন্যদের বেদম মারধর করে। লক্ষ্মীরানী প্রায় আধামাইল দৌড়ে একটি বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। ক্যাডাররা সেখানে এসেও লক্ষ্মীরানীর চুলের মুঠি ধরে মাটিতে শুইয়ে দেয়। তাকে বেধড়ক পেটানো ছাড়াও ৭/৮ ক্যাডার পা দিয়ে ইচ্ছামতো তাঁকে মাড়ায়। মুমূর্ষু লক্ষ্মীরানী বর্তমানে গলাচিপা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ দিকে এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। লক্ষ্মীরানী মজুমদারকে দীর্ঘদিন থেকে ইউপি মেম্বার মোসলেম গাজী জ্বালাতন করে আসছে। লম্পট হিসাবে পরিচিত এবং বার বার দলবদলকারী মোসলেম গাজীর এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপিত্তি রয়েছে। গত বছরের পহেলা জানুয়ারি রাতে লক্ষ্মীরানী মজুমদারকে মেম্বার মোসলেম গাজী ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। এলাকার আরেক প্রভাবশালী ও ইউপি চেয়ারম্যান এ ঘটনায় মোসলেম গাজীর পক্ষ নেয়। লক্ষ্মীরানী মজুমদার অভিযোগ করেছে, পুলিশ তার মামলায় আদৌ কোন তদন্ত করেনি। সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়নি। পুলিশ তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ না পেয়ে তাকে মামলার নিষ্পত্তির জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়। সোমবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, লক্ষ্মীরানীকে আসামী করে পলাতক মোসলেম গাজীর পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। লক্ষ্মীরানীর পক্ষেও থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ রেকর্ড করেনি। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে লক্ষ্মীরানীর পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৬ মার্চ ২০০২

মন্তব্য করুন