সংখ্যালঘু পরিবারের মৃত এক বৃদ্ধা মহিলার সৎকারের জন্য বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

প্রতিপক্ষ সংখ্যালঘুর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। এসময় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলের সৈয়দপুর মৈশালপাড়া গ্রামে এ অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সোমবার (৩১ মে) গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আদিলুর খান আদিন জানান, রবিবার (৩০ মে) সকালে সৈয়দপুর মৈশালপাড়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তোষ সরকারের মা বৃদ্ধা রাখাল রানী (৯০) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার পর তাকে সৎকারের জন্য পরিবারের সদস্যগণ বাড়ির উঠানে বাঁশ ঝাঁড়ে বাঁশ কাটতে যান। বাঁশ ঝাঁড় ও জমি নিয়ে আজাদ মিয়ার সঙ্গে বিরোধ ছিল। তিনি ঢাকায় বসবাস করলেও এখানে জমির উপর থাকেন সোহরাব, সাগর ও তাদের পরিবার। বাঁশ কাটা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে শ্রীভাষ সরকার, সন্তোষ সরকার, আনন্দ সরকার, মহানন্দ এবং প্রতিপক্ষ সাগর, মাইদুল, সোহরাব ও বাদশা মিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়। শ্রীভাষ সরকার. সন্তোষ সরকার এবং সাগর ও সোহরাব মিয়া গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অপর দিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কে বা কারা সংখ্যালঘু শ্রীষাস সরকারের বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। এ সময় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মৃত বৃদ্ধা রাখাল রানীকে সৎকার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকায় থমথমে ও সংখ্যা পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মৃত বৃদ্ধা রাখাল রানীকে সৎকারের জন্য বাঁশ কাটা নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল এবং এ নিয়েই হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃদ্ধা রাখাল রানীকে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সৎকার করা হয়েছে। অগ্নি সংযোগ ও মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। রমজান ও শামসুল নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করে সোমবার (৩১ মে) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

ইত্তেফাক

মন্তব্য করুন