মাগুরায় ধর্ষণের অভিযোগ তোলা কিশোরীর পরিবারকে জরিমানা ও একঘরে করেই ক্ষান্ত হননি সেই আওয়ামী লীগ নেতা! ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেছেন, মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিদ্দিকী লিটন আত্মগোপন করে থাকলেও তার অনুসারীরা তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ফলে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, লিটনের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ তদন্ত করছে তারা। কিশোরীর বাবা বলেন, ‘লিটন ঘটনার পর গা ঢাকা দিলেও তার অনুসারীরা নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। মন্নু নামে তার এক অনুসারি হুমকি দিয়ে বলেছে, পুলিশ কয়দিন থাকে দেখবো। আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, মাগুরার নহাটায় ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা এক কিশোরীর পরিবারকে সালিশের মাধ্যমে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা লিটন। টাকা দিতে না পারায় গত সোমবার মেয়ের বাবার বাড়ি থেকে গরু, ছাগল, সাইকেল ছিনিয়ে নেয় তার অনুসারীরা। এ ঘটনায় লিটনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মেয়েটির পরিবার।
এদিকে নহাটা গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অভিযুক্ত লিটন এরকম আরও অনেক সালিশের সঙ্গে জড়িত। সব সালিশেই এরকম জরিমানা করেছেন তিনি। তবে তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘লিটনের কিছু কাজ একাত্তরের বর্বরতাকে মনে করিয়ে দেয়। তবে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।’
এদিকে, সোয়া লাখ টাকা জরিমানা ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হলেও ঘটনার মূল হোতা মোস্তফা সিদ্দিকী লিটন ও ওবায়দুর রহমানকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। ব্যাপারে জানতে চাইলে মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার আবির সিদ্দিকী শুভ্র বলেন, ‘আমরা লিটনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তবে তার বিরুদ্ধে এরকম আরও অভিযোগ রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি সেগুলো।’ ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় খবর রাখছি তাদের। তারা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে আছেন।’