জোরপূর্বক জায়গা জমি দখল আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় একটি ইস্যু। ভূমি দখল, পুকুর দখল, নদী দখল আমাদের দেশের অনেক পুরানো একটি সমস্যা, বছরের পর বছর ধরে এই জোরপূর্বক জমি দখল চলে আসছে। বলাই বাহুল্য যে, দুর্নীতি, অপসংস্কৃতি, অবৈধ লেনদেন বা ক্ষমতার অপব্যবহারের মত অনাকাঙ্খিত ঘটনা হরহামেশাই ঘটে থাকে। তবে, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এমন একটি সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে সে তুলনায় খুব কম আলোচনা হয়। হয়ত একারণেই এই ইস্যু এখনো প্রকটভাবে রয়েছে। তারই একটি ঘটনা নওগাঁর নিয়ামতপুরের রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর কুশাডাঙ্গা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর কুশাডাঙ্গার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মৃত শুকচাঁনের দুই ছেলে অশিক্ষিত অসহায় তারাপদ ওঁরাও ও অনিল ওঁরাও এর ভোগ দলীয় পুকুর জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের মাহবুবুর রহমানের ছেলে শহিদুল ইসলাম, রমজানের ছেলে জামাল, মিতুন, মাহবুবুর রহমান, সোনাউল্লাহসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর মৌজার ২ (ক) নম্বর খতিয়ানের সাবেক দাগ ২২৭, হাল দাগ ২৮২ এর একটি পুকুর জোরপূর্বক দখল করে রাখে পুকুরপাড়ে অবস্থানরত শহিদুল ইসলামসহ ১৬জন ব্যক্তি।
তারাপদ ওঁরাও বলেন, আমার বাবা মৃত- শুকচাঁন ওরাও মহাদেবপুর জমিদারের নিকট থেকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে নেন। কিন্ত ১৯৬২ সালে এসএ রেকর্ডে ভুলবশত পূর্বের নামই থেকে যায়। কিন্তু মাঠ খসড়ায় শুকচাঁন ওঁরাও এর নামে হয়। পুনরায় ১৯৭২ সালে আরএস রেকর্ডে আবারো ভূলবশত সরকারের নামে ২ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত হয়ে যায়। আমরা রাজশাহী সাব জজ আদালতে ১৯৭৮ সালে রেকর্ড সংশোধনীর মামলা দায়ের করলে ১৩ নভেম্বর ১৯৮০ সালে আমাদের পক্ষে রায় হয়। মামলা নং- ৩৩৫/৭৮। পুকুরপাড়ের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম গংরা রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এখন তা চলমান রয়েছে। সরকার খাস পুকুর হিসাবে লিজ প্রদান করলেও তা বাতিল করে। লিজ বাতিল করা সত্ত্বেও দখলদাররা এখনও পুকুর দখল ছাড়ে নাই।
অনিল ওঁরাও বলেন, আমরা সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলে তারা আমাদের পুকুর জোর করে দখল করে রেখেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মরহুম আঃ রাজ্জাক বেঁচে থাকা কালীন আমাদের পুকুরটি বেদখল করে নেন। এখন তার ভাইয়েরা নেতুত্ব দিয়ে জোরপূর্বক দখলের সহযোগিতা করছেন।
অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছিলাম। সরকার লিজ বাতিল করলে আমরা আর পুকুর দখলে রাখিনি। এখন পুকুর নিয়ে মামলা চলছে। আমরা রায়ের অপেক্ষায় রয়েছি।

রাজশাহী দর্পণ

মন্তব্য করুন