ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে সেলিম (৩৮) নামের এক যুবককে বাড়ি থেকে নিজের গরুর খামারে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের একই গ্রাম আন্ধারিয়াপাড়ায় নিহত সেলিম ও ওই এসআইয়ের বাড়ি। অভিযুক্ত এসআই মোহাম্মদ আলী জামালপুর সদর থানায় কর্মরত বলে পুলিশ জানিয়েছে। তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন।

এ ঘটনায় গতকাল রবিবার সকালে এসআইয়ের সৎমা ফিরুজা খাতুনকে (৩৬) বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ। তাঁর দেওয়া তথ্য মতে এসআই মোহাম্মদ আলীর গরুর ফার্মের পাশে পুকুরপাড়ের গর্ত থেকে নিহত যুবকের রক্তমাখা কাপড়চোপড়, রশি, রড ও শিকল উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে আন্ধারিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে সেলিম মিয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে রিয়াদ নামের এক যুবক ডেকে এসআই মোহাম্মদ আলী গরুর ফার্মের ভেতরে নিয়ে যান।

রাতে ফার্মে আটক রেখে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে তাঁকে মারধর করেন মোহাম্মদ আলী, তাঁর ভাই মোহাব্বত আলী ও ভাতিজা রিয়াদ। সেলিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে গভীর রাতে সিএনজিযোগে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত’ বলে ভর্তি করে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। গতকাল সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন সেলিমের মৃত্যু হয়।

নিহতের স্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধার কন্যা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মুখে কাপড় ঢুকিয়ে রড দিয়ে মারতে মারতে তাঁর বাঁ পা ভেঙে ফেলেন, শরীরে বিভন্ন স্থানে থেঁতলে দেন দারোগা মোহাম্মদ আলীসহ তাঁর ভাই-ভাতিজারা।’ এ ঘটনায় ফাতেমা খাতুন বাদী হয়ে মোহাম্মদ আলীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন। কী কারণে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি ফাতেমা খাতুন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক সরকার বলেন, ‘হত্যাকারীরা যতই ক্ষমতাধর ব্যক্তি কোক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’

ফুলবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে হাসপাতালে ভর্তি করে ঘাতকরা পালিয়ে যায়, সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ হত্যার ঘটনার সঙ্গে এক এসআইয়ের জড়িত থাকার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিহত যুবকের পরিবারের অভিযোগে ঘটনার সঙ্গে একজন সাব ইন্সপেক্টর জড়িত রয়েছেন, তাঁর বাড়ি আন্ধারিয়াপাড়া।’

সূত্রঃ কালেরকন্ঠ

মন্তব্য করুন