বরিশালে বিজয় উল্লাসে প্রমত্ত চার দলীয় জোট ক্যাডারদের সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। স্বরূপকাঠির আাওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা এখন বিএনপির সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ভাংচুর , হামলা- লুটপাট ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনের পর থেকে। চলছে চাঁদাবাজি। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, স্বরূপকাঠি বাজারের এক খ্যাতনামা সংখ্যালঘু ব্যবসায়ী আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। প্রতিহিংসা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক ছাত্রলীগ নেতাকে না পেয়ে তার চাচাত ভাইয়ের শরীরে গরম জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে। স্বরূপকাঠিতে নতুন কাউকে দেখলেই বিএনপি কর্মীরা তাকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে। পুলিশ বলেছে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিএনপি সভাপতি বলেছেন তাদের কর্মীরা এসব ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকরা সেখানে গেলে এমন পরিস্থিতি নজরে আসে। স্বরূপকাঠি উপজেলায় দুপুরে পৌঁছানোর পর সেখানকার উপজেলা পরিষদের সামনে বিএনপির একদল কর্মী তাদের গতিরোধ করে। সাংবাদিকদের কাছে জানতে চায় তারা কারা? কোথা থেকে এসেছেন? পৃষ্ঠইতি প্রতিকুল দেখে সংবাদকর্মীরা পরিচয় গোপন করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ̄স্বরূপকাঠিতে ভোট বেশি পাওয়ায় তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের স্টীমরোলার। আরামকাঠি এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নান্টুর নেতৃত্বে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ধীরেন শিকদারকে মারধর করা হয়। কাটাপোলের কাছে চার পাঁচটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দোকান ভাঙা হয়েছে নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে। আরামকাঠি হাজী ইব্রাহিম স্কুলের পাঁচ জন শিক্ষককে স্কুলে যেতে না করে দিয়েছে বিএনপি কর্মীরা। পুলিশের অতিরিক্ত এসপি কোহিনুর মিয়া স্বরূপকাঠি থানাতেই ছিলেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যেসব ঘটনা শোনা যায় তা আসলে গুজব। তবুও বিভিন্ন এলাকায় তাদের টহল পুলিশ রয়েছে। থানাতেই ওসির রুমে বসে ওসি ও অতিরিক্ত এসপির সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেলো স্বরূপকাঠি বিএনপির সভাপতি মতিউর রহমানকে। তিনি জানান, তাদের কোন কর্মী এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। দু-একটি যেসব ঘটনা ঘটেছে সে ̧লো আওয়ামী লীগ থেকে আসা কর্মীরা ঘটাচ্ছে।
ভোরের কাগজ, ৬ অক্টোবর ২০০১