বাজিতপুর পৌর এলাকায় চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারীরা আবার তৎপর হয়ে উঠেছে। গত ১ সপ্তাহে সংঘটিত বেশ কটি ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় পৌরবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এদিকে চাঁদাবাজদের হুমকির মুখে পালপাড়া এলাকার একটি হিন্দু পরিবারের লোকজন গত পাঁচ দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অপর এক হিন্দু ব্যবসায়ীকে চাঁদাবাজরা ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। গতকাল রোববার বাজিতপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান মিজবাহ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ করা হলে অভিযোগ পেয়েছেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে এ ধরনের অপরাধ বাড়ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে একদল চাঁদাবাজ বাজিতপুর বাজারের ঘড়ি ব ̈বসায়ী ধীমান দত্তের (৩২) দোকানে হানা দিয়ে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে তাকে পরিবারবর্গসহ ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীরা ধীমানকে তার ভাইয়ের কাছে ‘পাওনা’ ১০ হাজার টাকা আদায় করে দিতে বলে। সূত্র মতে, গত ৪ মার্চ একদল চাঁদাবাজ ব্যবসায়ী ধীমানের ছোট ভাই মনা ও পালপাড়ার দরিদ্র ফল ব্যবসায়ী মিলন দেবনাথের ছেলে হরিগোপালের কাছে চাঁদা দাবি করে। এ সময় স্থানীয় জনতা মাসুদ (২৪) নামে এক চাঁদাবাজকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মাসুদকে ধরিয়ে দেওয়ার পেছনে মনার ভূমিকা রয়েছে এ অজুহাতে মনার ভাই ও তার পরিবারের ওপর চাঁদাবাজরা চাপ সৃষ্টি করছে বলে ধীমানের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনার পর থেকে মনা পলাতক রয়েছে। জানা যায়, চাঁদাবাজরা পালপাড়ার মিলন দেবনাথের (৫৫) ছেলে হরিগোপালের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে হরিগোপাল আত্মগোপন করলে সন্ত্রাসীরা হরিগোপালের বাড়িতে চাঁদার জন্য হানা দেয়। চাঁদাবাজরা হরিগোপালের পিতা মিলনকে টাকা না দিলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। যে কারণে গত পাঁচ দিন ধরে মিলন দেবনাথ তার পরিবার-পরিজনসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে মহল্লাবাসী জানান। এদিকে ছিনতাইকারীরা গত শুক্রবার দুপুরে বাজিতপুর বাজারের সর্ণ ব্যবসায়ী রাধেশ্যাম চৌধুরীর দোকান থেকে একটি সর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। রাধেশ্যাম চৌধুরী জানান, ছিনতাইকারীরা ক্রেতা সেজে চেইনটি ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া গত ৪ মার্চ সন্ধ্যায় বাজিতপুর বাজার সংলগ্ন দড়িঘাগটিয়া এলাকার চাকরিজীবী অধীরচন্দ্র সাহার বাড়িতে তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বেড়াতে আসা এক মহিলার গলা থেকে ছিনতাইকারীরা একটি সর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। গতকাল রোববার বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হকের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাঁদাবাজি বা ছিনতাইয়ের ঘটনার ব্যাপারে তিনি অবগত নন। এসব ব্যপারে অভিযোগ পেলে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।

প্রথম আলো, ১১ মার্চ ২০০২

মন্তব্য করুন