যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৈধ ভোটারদের বিভিন্ন অজুহাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ জাতীয় হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু এলাকায় হিন্দু ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্যেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শহরের বেজপাড়া এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত প্রায় ৬০০ ভোটারের নাম ‘অবৈধ’ দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচন অফিসে আপত্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে। এদিকে দাখিলকৃত তালিকার ব্যাপারে সরাসরি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহল বিশেষ উদ্দেশ্যমূলক নিছক মানসিকভাবে হয়রানি করার জন্য এসব বৈধ ভোটারের ব্যাপারে আপত্তি দাখিল করেছে।
বেজপাড়া গয়ারাম সড়কের অঞ্জলী দত্ত (ভোটার নং ০০২০৯), কণিকা রাণী দত্ত (০০২১১) পদ্মারাণী (০০২১২), ডলি রাণী (০০১৯৯), বিউটি মণ্ডল (০০২৩৬), জয়ন্তী মণ্ডল (০০২৩১) প্রমুখ হিন্দু মহিলার নাম ‘অবৈধ’ বলে আপত্তি তোলা হয়েছে। অথচ এসব মহিলা যথারীতি এলাকায় স্বামীসহ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বসবাস করছেন।
গত ২৪ আগস্ট বাবু শ্রীভূষণ ঘোষের সভাপতিত্বে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের এক সভায় নির্বাচনের প্রাক্কালে হিন্দু বৈধ ভোটারদের নাম বিভিন্ন অজুহাত তুলে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার হীন প্রচেষ্টার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সভা থেকে বিভিন্ন উপজেলা নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণসহ প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গতকতাল রোববার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ বেজপাড়া এলাকার বৈধ হিন্দু ভোটারদের ব্যাপারে মহল বিশেষের অভিযোগ দাখিলের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে হিন্দু অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিনকয়েক আগে রাতের বেলায় সদর উপজেলার শুড়ো-বাগডাঙ্গা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত লোকদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, ‘কথা না শুললে পরিণাম খারাপ হবে। সব সময় পুলিশ তোমাদের নিরাপত্তা দেবে না।
প্রথম আলো, ২৭ আগস্ট ২০০১
কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন