ভৈরবের পল্লীতে এক সংখ্যালঘু পরিবারের যুবতী মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সন্তানদের সামনেই এক নরপশু ধর্ষণ করেছে যুবতীর মাকে। এ ঘটনা কাউকে জানালে সবাইকে হত্যা করা হবে এই হুমকি দেয়ায় পরিবারটি আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না। ঘটনাটি ঘটেছে ১১ জুন রাত ২ টায় ভৈরব থানা থেকে ৭ কি. মি. দূরে উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নের রাজনগর পল্লীর হিন্দুপাড়ায়। জানা গেছে, রাজনগর পল্লীর মৃত আবদুল খালেক মিয়ার ছেলে হাসান আলী (২৭) ও নোয়াজ মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (২৮) সহ ৩ জন একই পল্লীর হিন্দু পাড়ার প্রফুল্ল চন্দ্র দেবনাথের ঘরে গত ১১ জুন রাতে প্রবেশ করে। তারা প্রফুল্ল চন্দ্রের যুবতী মেয়েকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে মা কানন বালা (৪০) এগিয়ে এলে নরপশু হাসান আলী তাঁকে সন্তানের সামনে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর প্রফুল্ল বাড়ি এসে সব শুনে এলাকার মাতব্বরদের জানান। কিন্তু গ্রাম্য প্রধানরা ব্যস্ততা ও নানা কাজের অজুহাতে কালক্ষেপণ করতে থাকে। প্রফুল্লর স্ত্রী এই প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনার দিন স্বামী বাড়ি ছিলেন না। তাঁর ননদ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রাত প্রায় ২টায় ঘরের বাইরে গেলে নরপশুরা তার ননদকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে বাবুল ও হাসান আলী ঘরে ঢুকে তাঁর যুবতী মেয়েকে ঘুম থেকে টেনেহিচঁড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। মেয়েকে কলঙ্কিত না করার জন্য নরপশুদের কাছে অনুনয় বিনয় করলে হাসান আলী মেয়ে ও ২ সন্তানের সামনে তাকেই ধর্ষণ করে। প্রতিবেশীরা জেগে গেলে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। যাবার সময় এ ঘটনা যাতে কাউকে না বলে সে জন্য তাদের শাসিয়ে যায়। রাজনগর বাজার কমিটির সভাপতি আকবর মিয়া বলেন, ঘটনাটি সত্য। এলাকায় সালিশ দরবারের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ধর্ষণের এই ঘটনার ৫দিন হয়ে গেলেও থানায় কোন মামলা হয়নি। ধর্ষণের আলমত নষ্টের উদ্দেশ্যেই গ্রাম্য মাতব্বররা সালিশীর নামে কালক্ষেপণ করছে বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছে। ফলে এই পরিবারটি বিচার পাবে কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৭ জুন ২০০২

মন্তব্য করুন