ভোলা জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৩, ১৪ ও ১৫ জুলাই সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৩০০টি পরিবার মারাÍকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই হামলায় কোনো মৃত্যু না ঘটলেও অর্ধশতাধিক দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর এবং কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

নির্বাচনের আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সন্ত্রাসীদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে সমাজের দুর্বল অংশ সংখ্যালঘুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যথারীতি। ভোলা জেলায় সংঘটিত এই ঘটনার ওপর সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের একটি সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনে এ কথাগুলো বলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে অজয় রায়, পঙ্কজ ভট্টাচার্য এবং চৌধুরী খুরশীদ আলম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯২ সালে ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত মহল এই অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নারকীয় হামলা চালিয়েছিল তার বিচার না হওয়াতে পরবর্তী সময়ে আবারও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। ১৯৯২ সালের হামলার ঘটনার নায়করাই আবারও এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাম্প্রতিক এই হামলার ঘটনায় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি মুসলমানরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রবল ভীতির সঞ্চার হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্থানীয় একটি স্কুলে স্কুলছাত্রীর উপস্থিতি অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। এই স্কুলে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই হিন্দু।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করা হয়। পাশাপাশি ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নির্বাচনের সময় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়। সংখ্যালঘুরা তাদের ভোট প্রদানের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে বলে সামাজিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

প্রথম আলো, ১৪ আগস্ট ২০০১

কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন

মন্তব্য করুন