মাদারীপুর সদর উপজেলায় মঠের এক সেবায়েতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৭ মার্চ) মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই ঘটনায় কিশোরীর মা ২৬ মার্চ শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম টমেন ত্রিপুরা। তিনি খাগড়াছড়ির উপেন্দ্র ওরফে পাটানর ত্রিপুরার ছেলে। টমেন মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নতুন প্রণবমঠের মন্টু মহারাজের সেবায়েত হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রণবমঠের পাশে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন টমেন। মঠের পাশে ওই কিশোরীর বাড়ি হওয়ায় তার সেখানে যাতায়াত ছিলো। টমেনের রান্নার লোক ছুটিতে থাকায় তিনি ওই কিশোরীর মাকে রান্না করে দেওয়ার জন্য বলেন। পরে ওই কিশোরী তার রান্না করে দেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরী রান্না করতে গেলে টমেন ত্রিপুরা কিশোরীকে তার নিজের থাকার ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য এবং কাউকে জানালে কিশোরী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেন।
ঘটনার পর কিশোরী তার পরিবারকে ধর্ষণের ঘটনা জানায়। পরে এলাকায় জানাজানি হলে টমেন ত্রিপুরা পালিয়ে যান।
এ বিষয়ে কিশোরীর মা বলেন, “আমার স্বামীর মানসিক সমস্যা আছে। তাছাড়া আমরা গরীব মানুষ। তাই প্রথমে মামলা করতে সাহস পাইনি। এই ঘটনা নতুন প্রণবমঠের দায়িত্বে থাকা মন্টু মহারাজকে জানাই। পরে ইউপি সদস্য অমল ভক্তকে জানাই। তারা সালিশের মাধ্যমে বিচারের আশ্বাস দিলেও কোনো লাভ হয়নি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কোনো বিচার না পেয়ে শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করেছি। মামলা পর থেকে আমাদের এলাকার প্রভাবশালীরা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “জানি না আমি এর বিচার পাবো কিনা। তাছাড়া ধর্ষণের ঘটনার পর আমার মেয়ে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়েছে। আমি দ্রুত ওই টমেন ত্রিপুরার গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানাই।”
নতুন প্রণবমঠের ভক্ত নাদিম বৈদ্য বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। সত্য মিথ্যা জানি না। অভিযুক্ত টমেন ত্রিপুরা পালিয়ে গেছে। তাকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। তাকে পাওয়া গেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।”
এ ব্যাপারে মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা ওই কিশোরীর পাশে আছি। তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।”
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার সকালে এক কিশোরী হাসপাতালে এসে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।