মানিকগঞ্জে পুলিশের হয়রানি বন্ধ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন নির্যাতিতা এক নারী ও তার মা। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা গ্রহণে বিলম্ব, হয়রানি ও পরবর্তীতে মামলার তদন্তে গড়িমসিসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগে শিবালয় থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখায় পুলিশ। নানা ধরনের ভয়ভীতি এবং মামলা না করার জন্য চাপ দিতে থাকে। বিষয়টি আপসের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এছাড়া স্থানীয় তেওতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ও স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন তোতা এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের সম্মতি ছাড়াই একটি সালিশ বসায়। এমনিক সেখানে আমাদের না যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। ঘটনার পরের দিন তৎকালীন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমকে জানাই এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঘটনার ১৭দিন পর মামলা নেয় থানা। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই শাহজালাল মিয়াকে।”

তিনি আরও বলেন, “এসআই শাহজালাল মামলার তদন্তের কাজে বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে আমার বাড়িতে আসতেন। আসামিদের ধরতে বললে নানা টালবাহানা ও অজুহাত দেখাতেন। বাড়িতে আসা-যাওয়ার একপর্যায়ে তিনি আমাকে কু-প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তদন্তাধীন মামলাটির মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ার ভয় দেখান। পরে তদন্ত শেষে ২৯ জুন কোর্টে মনগড়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। বিষয়টি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে উল্টো মিথ্যা মামলার ভয় দেখান। আসামি ও পুলিশের ভয়ে আমরা এখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিবালয় উপ পরিদর্শক (এসআই) শাহজালাল মিয়া মোবাইল ফোনে দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই নারী মিথ্যা কথা বলছেন।

 

“আমি তাকে কোনো ধরনের কু-প্রস্তাব দেইনি। তদন্ত করে যা পেয়েছি আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে ভিত্তিতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) হাফিজুর রহমান বলেন, “বাদী যদি মনে করে তদন্ত সঠিক হয়নি তাহলে কোর্টের মাধ্যমে পুনরায় তদন্ত করাতে পারবেন। যেহেতু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহজালাল মিয়ার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাবের অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।”

উল্লেখ্য, চলিত বছরের ১৭ মে শিবালয় উপজেলার আলামীন জমাদ্দার (২৪) নামে এক তরুণের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে শিবালয় থানায় মামলার করেন নির্যাতিতার মা। ওই মামলায় মোট চারজনকে আসামি করা হয়।

ঢাকা ট্রিবিউন 

মন্তব্য করুন