টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মীর শহীদুর রহমান (৫০) বছরের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে এলাকাবাসী। পরে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

 

২১ এপ্রিল বুধবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শহীদুরকে আটক করে। এ ছাড়া তার দোকান ঘর ও চালের উপর থেকে একটি ছুরি, একটি দা, দুটি লাঠি ও একটি হাতুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শহীদুর রহমান আনাইতারা ইউনিয়নের আটঘরি গ্রামের মৃত সেকান্দার আলীর ছেলে।

এলাকাবাসী জানান, মীর শহীদুর রহমান আটঘরি গ্রামে তার বাড়ির সামনে দোকানে ব্যবসা করেন। মাঝে মধ্যে ছুরি, দা, লাঠি নিয়ে আটঘরি গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে গিয়ে মূর্তি ঘরের সামনে দা নিয়ে শুয়ে থাকেন। ধর্মীয় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে ও বিভিন্নভাবে ওই পরিবারগুলোকে হুমকি প্রদর্শন করেন। বুধবার দুপুরে মীর শহীদুর রহমান দা ও লাঠি নিয়ে আনন্দ মোহন চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন। পরে মন্দিরের সামনে থাকা ধর্মীয় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। মন্দির ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে তালা থাকায় ভেতরে যেতে না পেরে বারান্দায় শুয়ে থাকেন। তার ভয়ে বাড়ির লোকজন ঘরে তালা দিয়ে ভেতরে অপেক্ষা করতে থাকেন। গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটঘরি বাজারে আটকে রাখে। পরে পুলিশ খবর দিয়ে তাদের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়।

গ্রামের দিলীপ সরকার, প্রণব কুমার রায়, অঞ্জলী সরকার, দিপালী সরকার জানান, মীর শহীদুর রহমান শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ছুরি, দা ও লাঠি নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আমরা সবসময় তার ভয়ে ভীত থাকি।

আনাইতারা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও গ্রামের বাসিন্দা সামছুর রহমান সন্টু ও সমাজসেবক মীর আসাদুল ইসলাম সাজু, মীর মঞ্জুর রহমান জানান, মীর শহীদুর রহমানের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে।

মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপু সরকার জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হুমকি প্রদর্শনের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে শহীদুর কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন রয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন। তার দোকান ঘর ও চালের উপর থেকে লাঠি, ছুরি, দা ও হাতুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রিজাউল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে শহীদুরকে নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকাবাসী মারপিট করায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হলে পরিবারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন