রংপুরে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আশরতপুর ইদগাপাড়ায় ভাড়াবাড়ি থেকে রিকশাচালকের মরদেহ উদ্ধার করে এলাকাবাসী। পরে বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সংলগ্ন আশরতপুর কোর্টপাড়া এলাকা থেকে পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয় বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আলতাব হোসেন।
নিহত রিকশাচালক নাজমুল হোসেনের বাড়ি লালমনিরহাটের মুস্তফি এলাকায়। শারীরিক প্রতিবন্ধী এই রিকশাচালক আশরতপুর ইদগাপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। অন্যদিকে, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি আশরতপুর কোটপাড়ায় বাড়িভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন।
স্থানীয়রা জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী নাজমুল দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর ব্যক্তিগত একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ওই রিকশা নিয়ে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ দেখা দেয়। এর জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোটপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান।
এদিকে, বুধবার দুপুরে ওই বাড়িতে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নাজমুলকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন পুলিশ সদস্য হাসান। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করে টায়ার আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে ঘণ্টাব্যাপী যানচলাচল চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা পৌনে সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার আলতাব হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ সদস্য হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।