রাজধানীর বংশাল থানা এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল-ইসলামের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ। ১০ মার্চ মঙ্গলবার রাতে বংশাল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে দুইটি পাসপোর্ট ও একটি স্মার্টফোন উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে সিটিটিসি।

গ্রেফতার জঙ্গির নাম আবু কায়সার ওরফে রনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি জিহাদের উদ্দেশে ইসকন মন্দির ও ইসকনের অন্যান্য স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। সম্প্রতি তার তিন সহযোগী ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার সিটিটিসি জানায়, গ্রেফতার আবু কায়সার ওরফে রনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল-ইসলামের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ২০১৮ সালে দুবাই যান। দুবাই অবস্থানকালে রনি অনলাইনে টেলিগ্রাম ও অন্যান্য নেটওয়ার্কিং অ্যাপসের মাধ্যমে সংগঠনের আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এ সময় নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত সন্দেহে ২০১৯ সালে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে সাত মাস জেলে রাখার পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয় তারা।

সিটিটিসি আরও জানায়, দেশে ফিরে এসে তিনি পুনরায় সংগঠনের সদস্যদের সংগঠিত করে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্য কাজ শুরু করেন। সম্প্রতি তার নির্দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল-ইসলামের কতিপয় সদস্য কথিত জিহাদের উদ্দেশে ইসকন মন্দির ও ইসকনের অন্যান্য স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ইতোপূর্বে এই সংগঠনের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে নিয়মিত মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রনির নির্দেশে হামলার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম জানায়, গ্রেফতারকৃত রনি তার অন্যান্য সহযোগীদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে টেলিগ্রাম ও অন্যান্য অনলাইন চ্যাট গ্রুপ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। এছাড়াও তিনি দুবাই অবস্থানকালে তার অনুসারীদের মাধ্যমে নাশকতামূলক কর্মকান্ড সংগঠনের উদ্দেশে অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য ক্রয় করে দেশে আনার চেষ্টা করেন।

কাউন্টার টেররিজম বিভাগ জানায়, রনির সাথে সংগঠনের দাওয়াত প্রদানকারী নাজমুল ওরফে উসমান গনি ওরফে আবু আইয়ুব আল আনসারীর যোগাযোগ ছিল। নাজমুল ওরফে উসমান ইতোপূর্বে জঙ্গিবাদ বিরোধী চলচ্চিত্র নির্মাণ করায় চলচ্চিত্র নির্মাতা খিজির হায়াত খানকে হত্যা প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনায় সমন্বয় করেন। এ সংক্রান্তে ২০১৮ সালে এই সংগঠনের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

জাগো নিউজ

মন্তব্য করুন