ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মাদক মামলার এক আসামির কাছ থেকে অবৈধভাবে ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের পুলিশের উপপরিদর্শক (এস আই) সেলিম রেজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

 

এ ঘটনায় এসআই সেলিম রেজা এবং তাকে সহযোগিতা করায় এএসআই আতাউল গনির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে।

অভিযুক্ত এসআই সেলিম লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় কর্মরত আছেন এবং এএসআই আতাউল গনি আছেন লালমনিরহাট সদর থানায়।

মাদক মামলার আসামি সুজিত কুমার ভদ্র (৪৪) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এসআই সেলিম ও এএসআই আতাউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হওয়ার পর থেকে তাকে ও ঘটনার সাক্ষীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি গত ২১ জুলাই রংপুর ডিআইজি অফিসে নিরাপত্তা চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

তিনি জানান, তাকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট সদর থানায় কর্মরত অবস্থায় এসআই সেলিম রেজা দুই দফায় তার কাছ থেকে ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা আদায় করেন। তার সাথে ছিলেন তার সোর্স আবুল কালাম ও এএসআই আতাউল গনি।

‘আমি শহরের গোশালা বাজারে মাছের আড়তের ব্যবসা করি। জীবনের ভয়ে আমি এসআই সেলিমকে টাকা দিয়ে দিই,’ জানান সুজিত কুমার ভদ্র।

‘এরপরও এস আই সেলিম আবারো টাকা নেয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। আমি বাধ্য হয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করি,’ বলেন তিনি।

চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি দুটি ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হলে এসআই সেলিমকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন পুলিশ সুপার। এরপর অভিযোগের তদন্ত ভার দেওয়া হয় সদর সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিকুল ইসলামকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। এরপরই এসআই সেলিম রেজা ও এএসআই আতাউল গনি প্রধাণের নামে ১৬ জুন দুটি বিভাগীয় মামলা রুজু হয়। বিভাগীয় মামলা দুটির তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) আতিকুল হক।

এ বিষয়ে এসআই সেলিম রেজা চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সুজিত কুমার ভদ্র একজন চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি ও সিন্ডিকেটের হোতা। তার বিরুদ্ধে লালমনিরহাট ও রংপুরে ১০টি মাদকদ্রব্য মামলা আছে। তিনি সুজিতের মাদকদ্রব্য চোরাচালানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

তবে অপর অভিযুক্ত এএসআই আতাউল গনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দ্য ডেইলি স্টার

মন্তব্য করুন