পুরান ঢাকার শাঁখারী বাজারে শনিদেব মন্দিরে হামলা ও মূর্তি ভাংচুরের প্রতিবাদে গতকাল সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায় একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করলে মিছিলে হামলা চালানো হয়। অজ্ঞাতদের হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। ইট-পাটকেলের আঘাতে মাথা ফেটেছে ৪ জনের। মিছিলকারীরা অভিযোগ করেছে, সন্ত্রাসীরা তাদের মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ̧লিও বর্ষণ করে। তবে কোতোয়ালি থানার পুলিশ বলেছে, মিছিলকারীরা সিটি করপোরেশনের একটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। জানা গেছে, মন্দিরে হামলা এবং কালিমূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ একটি মিছিল বের করে। এটি ছিল তাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ। মিছিলটি শাঁখারীবাজার থেকে বেরিয়ে তাঁতীবাজার ঘুরে ইসলামপুর এলাকায় প্রবেশ করলে একটি ৬ তলা ভবনের ওপর থেকে ইট পাটকেল ও গরম পানি নিক্ষেপ করা হয়। এতে মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক সেদিক ছুটাছুটি শুরু করে। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। অভিযোগ রয়েছে, মিছিলে সন্ত্রাসীরা গুলিও চালিয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে শান্তি রঞ্জন দে, তারক বড়াল ও সুকুমারের অবস্থা গুরুতর। তাদের মাথা ফেটে গেছে। হামলার পর মিছিলকারীরা শাঁখারীবাজারে ফিরে এসে মন্দিরের সামনে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। ওই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এডভোকেট ভোলানাথ দত্ত, প্রদীপ ধর, অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, বাসুদেব ধর, প্রেম রঞ্জন দেব, বাবুল দাস, এডভোকেট শ্যামল রায় প্রমুখ। প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন অজয় কুমার নন্দী। মূর্তি ভাংচুর এবং প্রতিবাদ মিছিলে হামলার প্রতিবাদে আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাঁখারীবাজরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের কর্মসূচি রয়েছে। এই কর্মসূচিতে মেজর জেনারেল (অবঃ) সি. আর দত্তসহ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এদিকে, গতরাতে এ ব্যপারে মেজর জেনারেল (অবঃ) সি. আর দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। আমরা তো কোনও সহিংসতা করিনি। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। হামলার পর পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
আজকের কাগজ, ২১ জানুয়ারি ২০০২