১১ দল নেতৃত্ববৃন্দ বলেছেন, নির্বাচনে বিজয়ী চার দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেনীর সংখ্যালঘুদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তারা শুধু বাড়ি দখল, জমি দখল বা মাছের ঘের দখলই নয়, লুটপাট ও ধর্ষণ চালাচ্ছে গ্রাম-গ্রামান্তরে; নেতৃত্ববৃন্দ এসব ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে আখ্যায়িত করে বলেন, আজকের ঘটনার জন্য বিদায়ী তত্বাবধায়ক সরকারও প্রাথমিকভাবে দায়ী। ১১ দল অবিলম্বে প্রতি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান। গতকাল বিকালে ওয়ার্কার্স পার্টি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ দল নেতৃত্ববৃন্দ এ কথা বলেন। ১১ দলের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার এলাকাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে অভিজ্ঞতার আলোকে নেতৃত্ববৃন্দ বলেন, রামশীল পরিদর্শনের নামে ঘটনাস্থলে না গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আকাশচারী হয়ে নিজের অযোগ্যতা ঢাকার জন্য সবাইকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। নেতৃত্ববৃন্দ বলেন, ঘটনার গুরুত্ব বুঝে মোল্লাহাটের থানা স্থানান্তর করা হয়েছে হিন্দু অধ্যুষিত নির্যাতিত এলাকায়। আগৈলঝাড়ার রাজিহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রমেশ দাস, কান্দি ইউনিয়নের অনিল দেব, অধ্যক্ষ জগদীশ গাইন, ফকিরহাটের পাগলার সুভাষ দেবনাথ, মনোতোষ দেবনাথ, মন্টু দেবনাথ, নিখিল দেবনাথ ও মৃনাল দেবনাথসহ বহু লোক প্রাণের ভয়ে বাড়ি ছেড়েছে। তাদের বাড়িঘর লুট হয়েছে। ধানডোবার অপূর্ব তালুকদারের পা কেটে ফেলা হয়েছে। মোল্লাহাটের গাওলা গ্রামের পরিমল মিস্ত্রীর স্ত্রী ও শাশুড়ি ধর্ষিত হয়েছে। তপন পোদ্দারের ঘেরের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, নির্যাতিতদের আশ্রয়ের জন্য রামশীল স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে, শরণখোলায় হিন্দুদের বলা হচ্ছে পূজা না করলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে, আগৈলঝাড়ার গ্রামে গ্রামে বলা হচ্ছে পূজা কর নইলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাও। ১১ দল নেতৃত্ববৃন্দ অবিলম্বে প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ১১দল নেতা রাশেদ খান মেনন, বিমল বিশ্বাস, নির্মল সেন, সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক ও মঞ্জুরুল আহসান খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আবদুল্লাহ সরকার, দীলিপ বড়ুয়া, ফজলে হোসেন বাদশা, নূর আলম লেনিন, আবদুল জব্বার, আবু আহমেদ প্রমুখ নেতৃত্ববৃন্দ।
যুগান্তর, ২০ অক্টোবর ২০০১