দেশব্যাপী ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন, লুটতরাজসহ বিভিন্ন্ সন্ত্রাসী ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন দল, সংগঠন ও ব্যাক্তি তারা পৃথক বিবৃতিতে হামলা-নির্যাতন বন্ধ এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। বাংলাদেশের জাতীয় হিন্দু পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এক বিবৃতিতে বলেন, অষ্টম জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গত একমাস যাবৎ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের শিকার। নানাবিধ কায়দায় তাদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালানো হয়, যাতে করে তারা সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে না পারেন। সংখ্যালঘুরা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য আমরা বারবার প্রশাসনের কাছে অনুরোধ,আবেদন ও দাবি জানিয়েছি; কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন উদ্যেগ নেয়নি এবং সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে সংখ্যালঘুদের অধিকাংশই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এমনকি নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘু অনেক পরিবার বাড়িঘর ছাড়া, বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাংচুর, দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমরা এ ধরনের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির আশু অবসান এবং রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পরিষদের সভাপতি বিচারপতি কে এম সোবহান এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর দেশব্যাপী আদিবাসী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আদিবাসী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, বরিশাল, লক্ষীপুর, ভোলা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ বাগেরহাটে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক ত্রাস, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দল ও ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সংযমী হওয়ার আহবান জানানো হয়। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি বেলাল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সামাদ সারাদেশে নির্বাচনোত্তর ব্যাপক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন ও ক্ষেত্রবিশেষে তাদের সহায়-সম্পদ লুটতরাজের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা এ ধরনের অসহিষ্ণু আচরনকে মৌলিক মানবাধিকারের লংঘন বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশের সকল শান্তিপ্রিয় মানুষকে সহমর্মিতা নিয়ে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী তাঁতি লীগ সভাপতি সোহরাব উদ্দিন আহমেদ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বিএনপির সন্ত্রাসী দেশের তাঁতি সমাজ তথা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চাঁদাবাজি, লুটপাট, শারীরিক নির্যাতন, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিনআহমেদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

দৈনিক সংবাদ, ৬ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন