ধর্ম প্রচারকারী সংস্থা ইস্কন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যক্ষ চারু চন্দ্র দাশ ব্রহ্মচারী (৩৫) গত ২৮ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত ৬ মে সকালে তার ভক্ত অনুসারীদের রংপুর যাওয়ার কথা বলে তিনি ঢাকাস্থ আশ্রম থেকে বের হন। সেই থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত বুধবার তার খোঁজে তারই এক ভক্ত রংপুরে এলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ হয়। ইস্কনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার স্বামীবাগে একটি দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জের ধরে তাকে গুম অথবা হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার এই নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সারাদেশের ভক্তদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা ও হতাশা বিরাজ করছে। ঢাকার ওয়ারিতে অবস্থিত ইস্কন মন্দিরে যোগাযোগ করা হলে তারা অধ্যক্ষ চারু দাশ ব্রহ্মচারীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গত ৬ মে সকালে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শন ও কৃষ্ণ ভক্তদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি রওনা হন। কিন্তু কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি ঢাকায় ফিরে না এলে ভক্তদের মাঝে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তারা ঢাকা থেকে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তার খোঁজ নেওয়ার জন্য লোক পাঠায়। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে তার নিখোঁজ হওয়ার ২৮ দিন গত হলেও একটি মহলের চাপের মুখে বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি কিংবা মামলা করা যায়নি। ইস্কন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ববৃন্দের ধারণা, দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় বৌদ্ধ ভিক্ষু ও পুরোহিত হত্যার মতো তাকেও হত্যা অথবা গুম করা হতে পারে। অপর একটি সূত্র জানায়, স্বামীবাগে একটি দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেও এ ঘটনা ঘটতে পারে । ইস্কনের মতো একটি আন্তর্জাতিক ধর্ম প্রচারকারী সংস্কারে বাংলাদেশীয় একজন ধর্মীয় নেতার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সারা বাংলাদেশে ইস্কন মন্দিরে অচলাবস্থা ও তার লাখ লাখ ভক্ত অনুসারীদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা ও হতাশা বিরাজ করছে।

ভোরের কাগজ, ৩ জুন ২০০২

মন্তব্য করুন