বাগেরহাট জেলায় নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব সার্বজনীন দুর্গাপূজা উৎসব তেমন জাঁকজমকভাবে উদ্যাপিত না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিএনপি তথা ৪ দলীয় জোট ক্যাডাররা নির্বাচনোত্তর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, বাড়িঘর লুট, চাঁদা দাবি, ভাঙচুর, মারপিট, হত্যা এমনকি যুবতীদের ওপর অত্যাচার করায় পূজার উৎসব আমেজে ভাটা পড়েছে। অনেক পরিবার নীরবে অত্যাচার হজম করছে। প্রাণের ভয়ে মুখ খুলছে না। গত কয়েকদিন আক্রমণের মাত্রা কমলেও স্থানবিশেষে সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের মাছের ঘের লুট করছে। দিন ও রাতে মেশিন বসিয়ে পানি তুলে লাখ লাখ টাকার মাছ ধরে হাটবাজারে বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। বিক্রিত টাকার ভাগ পৌঁছে যাচ্ছে কোন কোন নেতার কাছে। বাগেরহাটের শহরতলির কোণ্ডলা, গোটাপাড়া, সুলতানপুরসহ, পার্শ্ববর্তী অধিকাংশ সংখ্যালঘুর মাছের ঘেরগুলোর দখল এবং নিয়ন্ত্রণ করছে বিএনপি ক্যাডাররা। লোকমুখে এসব ঘটনা প্রচার হলেও পুলিশ অজ্ঞাত এবং রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বা ভুল করেও ওদিকে যাচ্ছে না। ফলে নিরাপদে সন্ত্রাসীরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অবস্থার মধ্য দিয়ে পূজার আনন্দ বিলীন হয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী সংবাদকে জানান, পূজা এলে তার দোকানে প্রচুর বিক্রি হতো। কিন্তু পূজার আর মাত্র ক’দিন বাকি। অথচ মাল বিক্রি হচ্ছে না। অন্য ব্যবসায়ীদের বক্তব্য একই। তারা বলেন, বাইরে থেকে লোকজন আসছে না। সর্বদা হিন্দুরা ভয়ে ভয়ে ঘরেই থাকছে। মালামাল বিক্রি হবে কেমন করে? শহরে লোকজন কম আসছে গ্রাম থেকে। এ অব ̄’ায় বাগেরহাট জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন জাঁকজমকভাবে হচ্ছে না।
সংবাদ, ১৯ অক্টোবর ২০০১