পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাবনাবাদ নদীর পাড়ে পুলিশের নির্যাতনে সুজন হাওলাদার নামে আজ এক জেলের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় নৌ-পুলিশের ৪ সদস্যকে ৬ ঘণ্টা আটকে রেখেছিল স্থানীয় জনতা। পরে বিকেল ৪টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় বাড়তি পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, এএসআই মামুনের নেতৃত্বে বানাতিবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ট্রলার নিয়ে রামনাবাদ নদীতে জেলেদের একটি ট্রলারকে ধাওয়া করে। ট্রলারে থাকা ৫ জেলের মধ্যে ৪ জন তীরে নেমে পালিয়ে যেতে পারলেও ট্রলারের ওপর সুজনকে ধরে বেদম প্রহার করা হয়। এক পর্যায়ে সুজন নিথর অবস্থায় ট্রলারের জালের ওপর পড়ে যায়।
খবর পেয়ে শত শত বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে। সুজনকে কলাপাড়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তার মৃত্যুর কথা জানান। পুলিশের মারধরে সুজনের কথা ছড়িয়ে পড়লে দোষী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চেয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
সুজনের মামা ইব্রাহিম খলিল জানান, ‘সুজনরা নদীতে মাছ ধরছিল। কোন কারণ ছাড়াই পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে তারা একটি ছোট খালে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে চার জন পালিয়ে যেতে পারলেও সুজনকে মারধর করা হয়। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে কলাপাড়া ও মহিপুর থানা থেকে ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে বিকেল ৪ টার দিকে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বানাতিবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন যে তিনি ছুটিতে আছেন। সুজনকে মারধরের কথা অস্বীকার করে এএসআই মামুন বলেন, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার সময় তাদের দেখে জেলেরা দ্রুত কিনারে ট্রলার ভিড়ায়। অন্য জেলেরা দৌড়ে চলে গেলেও ট্রলারের কাছে গিয়ে জালের ওপরে সুজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
কলাপাড়া থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। ময়না তদন্ত রিপোর্টে সুজনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।