আরও ৫ আওয়ামী লীগ কর্মীকে হত্যা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন চলছেই নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নির্যাতন চলছে। হাতিয়ায় সংখ্যালঘু ১০জনকে কুপিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা। দুর্ভাগ্যজনক যে, নির্বাচন-পরবর্তী সপ্তম দিনেও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকানপাট ও উপাসনালয়ের ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে আমাদের সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন। নারায়নগঞ্জে লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর আশ্রমসহ দুটি মন্দির আক্রান্ত হয়েছে। ফেনীতে হুমকির মুখে সপরিবারে পলায়নের চেষ্টাকালে এক ব্যক্তি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে প্রাণত্যাগ করেন। রবিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা,সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনাগুলোতে পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখে। বিভিন্ন সংগঠন অবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধ করার ব্যাবস্থা নিতে সরকার এবং সে সঙ্গে রাজনৈতিক দলসহ সমাজের সকল শুভশক্তিকে সম্মিলিত উদ্যেগ গ্রহণের জন্য আহবান জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ কর্মী ওসংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পাশাপাশি শহরসহ বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বিএনপির সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যেই হানাহানি করছে। বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে গত ক’দিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। কুমারখালী গ্রামের কবির মোল্লা ও মনির শিকদার এবং জিলবুনিয়া গ্রামের রহিম ফকির আওয়ামী লীগ কর্মী ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের এবংচাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে খবর এসেছে। কুমারখালি গ্রামের সলেমান ফকির ও দীনেশ মাঝি, কামলা গ্রামের ক্ষিতিশ শিকদার, জিলবুনিয়া গ্রামের যতীন হালদার এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সমাজ কল্যান প্রতিমন্ত্রীর এপিএস শিকদার ফজলুর রহমানের বাড়ি লুট হয়েছে। যতীন হালদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছে। নতুবা তার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। সন্ত্রাসের জনপদ ফেনীতে শনিবার সদর থানার সাঁড়ালিয়া গ্রামের দীনবন্ধু দাস হুমকির মুখে পালাতে গিয়ে পথিমধ্যে মারা যায়। সন্ত্রাসীরাতার গ্রামের অনিল চন্দ্র মাষ্টারকে নির্মমভাবে প্রহার করে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর দীনবন্ধু সপরিবারে পলায়নের চেষ্টা করছিলেন। লক্ষীপুরে বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুরসহ আওয়ামী লীগ নেতা ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, পুকুরের মাছ লুট, বাস টার্মিণাল দখলসহ আধিপত পরিবারের নগ্ন প্রয়াস চলছে। রবিবার সকালে নারায়নগঞ্জ শহরের লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারীর আশ্রম, দেওভোগ লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়া ও গলাচিপা রামকানাই জগন্নাথ জিউর মন্দিরে হামলা ও গুলিবর্ষিত হয়েছে। আখড়ার সেবায়েত রাজেন্দ্রপ্রসাদ ঝাঁ বলেছেন, হামলার পর সংখ্যালঘুরা ভয়ানকভাবে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। তবে কারা হামলা করেছে তাদের সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান। জগন্নাথ মন্দিরটি নারায়ণগঞ্জকেন্দ্র্র্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পূজা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক বাসুদেব চক্রবর্তী ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছেন। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় ঝিনাইদহ জেলার সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেই চলেছে। আওয়ামী লীগ কর্মী ও সমর্থক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলছে নির্যাতন।
দৈনিক জনকন্ঠ, ৮ অক্টোবর ২০০১