জেলার ডুমুরিয়া উপজেলাধীন মঠবাড়ি গ্রাম এখন কার্যত জনশূন্য। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালালে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীরা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। গ্রামের ভীত-সন্ত্রস্ত্র প্রায় ৫শ’ নারী-পুরুষ পার্শ্ববর্তী কাঁঠালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির ক্যাডারদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার জের হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সশস্ত্র বাহিনী কাঁঠালতলা বাজারে নিরীহ ব্যবসায়ী ও পথচারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। পরে তারা মঠবাড়ি মালোপাড়ায় যাওয়ার পথে বয়ারসিংহ, নাদায়তলা, চিত্রামারী, গোলাবাদাহ, চ্যাংমারী সহ বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষদের মারধর করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। সংখ্যালঘু এসব নারী পুরুষ লক্ষ্মীপূজার সরঞ্জাম কিনতে কাঁঠালতলা বাজারে যাচ্ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সন্ত্রাসী গ্রুপ মালোপাড়ায় গিয়ে মৎসজীবী নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতন চালায়। তারা সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে সন্ধ্যার মধ্যে এলাকা ত্যাগ করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এই এলাকার প্রায় ৫শ’ নারী-পুরুষ প্রাণের ভয়ে পার্শ্ববর্তী কাঁঠালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশ গ্রামের লোকজনদের ফিরিয়ে নেয়ার তৎপরতা চালায়। পুলিশ সুপার জানান, ভিটেমাটি ছাড়া লোকজন এলাকায় ফিরে গেছে। সেখানে পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন বিএনপির ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও লুটপাট করেছে। অপর একটি সূত্র জানায়, চরমপন্থী দুটি গ্রুপ এখন মুখোমুখি, যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
দৈনিক মুক্তকণ্ঠ, ৩১ অক্টোবর ২০০১