বকেয়া পাওনার দাবিতে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) দুটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের সময় পুলিশের ধাওয়ার ঘটনায় এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, পালাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আঘাত লেগে ওই নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

 

১৩ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে পুরাতন ডিইপিজেডের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন লিনি ফ্যাশন ও লিনি অ্যাপারেলসের প্রায় ছয় শতাধিক শ্রমিক। বিক্ষোভকারীরা প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়।

নিহত শ্রমিকের নাম জেসমিন বেগম। তিনি ডিইপিজেডে গোল্ডটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেডের সুয়িং অপারেটর ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভের সময় শ্রমিকরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।

শ্রমিকরা জানান, গত জানুয়ারি মাসের বকেয়া পরিশোধ না করেই তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে শ্রমিকরা বকেয়া দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলে কর্তৃপক্ষ কিছু বকেয়া পরিশোধ করে তবে বেশিরভাগই অপরিশোধ করা হয়নি।

বকেয়া আদায়ে আজ সকালে শ্রমিকরা ডিইপিজেডের সামনে জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। এ সময় শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে। পুলিশের হামলায় প্রায় ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলেও জানান শ্রমিকরা।

যোগাযোগ করা হলে ঢাকা শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শ্রমিকরা ব্যস্ততম সড়কটি অবরোধ করলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জল কামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ছুটোছুটি করে পালানোর সময় এক নারী শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে লেগে মাথায় আঘাত পাওয়া ওই শ্রমিক মারা গেছে বলে আমরা জেনেছি। তাকে পুলিশের কেউ আঘাত করেনি।’

এ ব্যপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নিহতের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

ডিইপিজেডের ব্যাবস্থাপক (জিএম) আবদুস সোবহান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কারখানা দুটিতে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক ছিল। গত জানুয়ারিতে কারখানা দুটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শ্রমিকদের ৪৫ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। কারখানা বিক্রি করে বাকি টাকা পরিশোধে মালিকপক্ষ ও বেপজা যৌথভাবে চেষ্টা করছে।’

দ্য ডেইলি স্টার

মন্তব্য করুন