ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে লাশ নিয়ে এসে পিতা হত্যার বিচার চাইলো মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের জামগড়া গ্রামের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আলতাব হোসেনের কিশোর পুত্র আরিফ হোসেন (১২) ও স্বজনরা। পুলিশী হেফাজতে হত্যাকান্ড বলে অভিযোগ স্বজনদের।
১২ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে মরদেহ রেখে এসব অভিযোগ করেন। এসময় নির্যাতনকারি পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তারা।
তবে পুলিশী নির্যাতনে মারা যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে ডলার প্রতারণা ও কঙ্কাল চুরির অপরাধে নারায়নগঞ্জে আড়াই হাজার থানায় একটি ও মুক্তাগাছায় ২টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি ত্রিশাল উপজেলার হাফিজুল নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে ডলার প্রতারণা মামলা করে। ওই মামলায় তাকে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গত ৫ মার্চ আলতাব জামিনে আসে। একসপ্তাহ বাড়ীতে থাকার পর বৃহস্পতিবার সে মারা যায়।
এদিকে নিহত আলতাব হোসেনের কিশোর পুত্র আরিফ হোসেন (১২) বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন, স্থানীয় বখাটে, জুয়ারি ও কঙ্কাল ব্যবসায়ী আজহার, সিরাজ ও সাইদুলের কথায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাগাছা থানার এসআই খায়ের ও হামিদ তার পিতা আলতাব হোসেনকে ধরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে স্থানীয় একটি জঙ্গলে গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এরপর চাচা ও তার স্ত্রীর কাছে ৮৫ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করে পুলিশ। হতদরিদ্র পরিবারটি টাকা দিকে অপারগতা প্রকাশ করায় মুক্তাগাছা থানায় ৩ দিন আটকে রেখে বেধড়ক পিটিয়ে ও অমানসিক নির্যাতন করে সমস্ত শরীর থেঁতলে দেয়।
এরপর আলতাবকে ডলার প্রতারণা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করলে গত ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ী ফিরে। এরপর থেকে সে অসুস্থ্য জীবনযাপন করে। কবিরাজিসহ স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করে। কিন্তু বুধবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু পথিমধ্যেই সে মারা যায়। পরে তাকে মুক্তাগাছা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ময়মনসিংহে পাঠিয়ে দেন। পরে পরিবারের লোকজন মরদেহ নিয়ে জড়িত পুলিশী বিচারের দাবিতে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয়।