সম্প্রতি দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নির্যাতন-হয়রানির বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্র এবং প্রচার মাধ্যমে যেসব ঘটনা প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্য রিপোর্ট দাখিল করার জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন এবং বিচারপতি মারযিউল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ আবেদন প্রদান করেন। আইন ও সালিশ কেন্দ্র নামক বেসরকারী সংস্থার পক্ষ থেকে সুলতানা কামাল আবেদনকারী হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন পেশ করেন। আবেদনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে বিবাদি করা হয়। আবেদনটি গত শনিবার প্রাথমিক শুনানি শেষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সন্ত্রাসীদের নির্যাতন বন্ধ করতে সরকারকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এর কারণ দর্শানোর জন্য সরকারের প্রতি রুলনিশি জারি করা হয়। একই সাথে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার বিষয়ে প্রার্থনার শুনানির দিন গতকাল ধার্য করা হয়েছিল। গতকাল আবেদনকারী আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে প্রখ্যাত আইনবিদ ড. কামাল হোসেন বিজ্ঞ আদালতে যুক্তি-তর্ক পেশ করেন। তিনি বলেন,দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সারা দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ও পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-অত্যাচার হয়েছে। এসব অত্যাচারের কিছু কিছু ঘটনা সংবাপত্রসহ অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত যাবতীয় ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া অতীব জরুরী। আইনের আশ্রয় পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত হওয়া আবশ্যক। শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত সরকারকে ওই আদেশ প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ,এফ হাসান আরিফ। আবেদনকারীর পক্ষে ড. কামাল হোসেনকে সহায়তা করেন ড. এম জহির ও এডভোকেট তবারক হোসেন।
দৈনিক জনকন্ঠ, ২৯ নবেম্বর ২০০১