রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রসহ নব্য জেএমবির পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সদস্যরা বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট)   তাদের গ্রেফতার করে। পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃতরা নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ গ্রুপের সদস্য। এরা হামলার জন্য ‘এক্সক্লুসিভ ডিভাইস বা আইডি তৈরির যন্ত্রাংশও সংগ্রহ করেছিল। দীর্ঘ নজরদারির পর এসব তথ্য নিশ্চিত হয়েই তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃতরা হলো-  মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে শাদী, শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল, মাসরিক আহমেদ, মো. আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেক ও এস এম তাসমিন রিফাত।

জানা গেছে, এর আগেও বিভিন্ন সময় জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেফতার করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। বিশেষ করে ২০১৪-১৫ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেশি ছিল। এ ছাড়া বহুল আলোচিত হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের মধ্যে নিবরাস ইসলামও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের উদাসীনতা এবং ঘটনাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় মাঝে মাঝেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জঙ্গিবাদে জড়ানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’ গ্রুপের সদস্যদের সবাই শিক্ষার্থী এবং নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। এরা পুলিশের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হামলাটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে সাদী। বাকিরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছিল। এদের মধ্যে মোহাম্মদ শিবলী আজাদ ওরফে সাদী নর্থ সাউথের বিবিএ চতুর্থ সেমিস্টারের এবং শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল বিবিএ ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

তিনি আরও বলেন, সাদী হামলার জন্য এক্সক্লুসিভ ডিভাইস বা আইডি তৈরি করার যন্ত্রাংশও সংগ্রহ করেছিল। সর্বশেষ রাজধানীর দুইটি জায়গা থেকে যে দুটি আইডি উদ্ধার করা হয় তার সঙ্গে এসব যন্ত্রাংশের মিল রয়েছে। আর শাহ এম আসাদুল্লাহ মুর্তজা কবীর ওরফে আবাবিল একদিকে আধ্যাত্মিক নেতা এবং সে এই হামলার জন্য অর্থ জোগাড় করার চেষ্টা করছিল। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে সে কিছু অর্থ এই হামলার জন্য জোগাড় করেছিল।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, মাসরিক আহমেদের দায়িত্ব ছিল যশোর থেকে অস্ত্র সীমান্ত দিয়ে পারাপার করে নিয়ে আসা এ হামলার জন্য। আর বাকি দুজন সদস্য সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এই পাঁচজনের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত আছে এই পরিকল্পনায়। তাদের গ্রেফতার করতে পারলে আরও তথ্য জানা যাবে। তারা যে হামলার জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করেছিল তা কৌশলগত কারণে আমরা বলছি না। আগে উদ্ধারকৃত দুটি আইডির সঙ্গে এদের কোনো যোগসাজশ আছে কিনা সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।

সূত্র

মন্তব্য করুন