সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীর দল এবার লোলুপ দৃষ্টি ফেলেছে বৌদ্ধমন্দিরের জমির ওপর। মন্দিরের বিশাল জমিখণ্ড দখল করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা রবিবার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং হাঙ্গরঘোলা গ্রামে একটি মন্দিরে হামলা চালায়। ওই এলাকার দুই সহস্রাধিক বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপাসনালয়টিতে সন্ত্রাসীর দল বর্বর হামলা চালিয়েছে। তারা মন্দিরের ঘেরা বেড়া, চালা উপড়ে ঘন্টি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। মন্দিরের এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে বেদম প্রহার করেছে। পুলিশ এ কথা স্বীকার করেছে। সন্ত্রাসীরা এই বর্বর হামলার সময় চিৎকার দিয়ে নাকি বলেছে,‘শালারা নৌকায় ভোট দিয়ে এখানে বসবাস করতে পারবি না।’ যেখানে ইচ্ছা সেখানে চলে যাবার জন্যও তারা নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় লম্বা ঘোনা এবং দরগাহবিল গ্রামের জাফর আলম, নূর আহমদ, সৈয়দ আলম, মোহাম্মদ হোসেন, সমিউদ্দিন, নূরুউদ্দিন ও জাহেদসহ ২০/২২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বৌদ্ধমন্দিরের পুরো জমি দখলের জন্য কয়েক ঘন্টা ধরে সেখানে তাণ্ডব চালায়। এ সময় মন্দিরের জমির কয়েক হাজার নানা জাতের ফলজ গাছের চারা তারা কেটে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীর দল নির্বাচনের পর থেকেই বৌদ্ধমন্দিরটি ভেঙ্গে মন্দিরের পুরো জমি দখল করে নেয়ার জন্য পাঁয়তারা চালিয়ে আসছিল। তারা সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় পৌঁছে মহাশুদ্ধ বৌদ্ধবিহার নামের এই মন্দিরের ভিক্ষু পাইঙ্গাপারাকে বেদম মারধর করে বের করে দেয়। এরপর তারা একে একে মন্দিরের বাউন্ডারি ঘেরা বেড়া এবং মন্দির ঘরের চালা উপড়ে ফেলে। মন্দিরের বিশাল ভূসম্পত্তিটিতে কয়েক হাজার ফলজ গাছপালাও লাগানো হয়েছিল। এসবও তারা কেটে ফেলেছে। এ ব্যাপারে মন্দিরের ভিক্ষু বাদী হয়ে উখিয়া থানায় রবিবার রাতে মামলা (নং-১৪ তাং ১৪.১০.২০০১) দায়ের করেছেন। উখিয়া সার্কেলের এএসপি আর, কে চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি উপরন্তু সন্ত্রাসীরা উল্টো হুমকি দিচ্ছে।

দৈনিক জনকন্ঠ, ১৬ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন