রাজনগর উপজেলার মুন্সীবাজার, রাজনগর , টেংরাবাজার, পাঁচগাঁও, কামারচাক ইউনিয়নের সংখ্যালঘুরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। নির্বাচনের পরপরই নৌকায় ভোট দেয়ার কারণে বিএনপি সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। ঘরের জিনিসপত্র লুটপাট করেছে এমনকি হালের বলদ পর্যন্ত জোর করে নিয়ে গিয়ে জবাই করে খেয়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। মানুষজন ভয়ে বাজারে যেতে পারছে না। অনেক এলাকার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। এক কথায় বর্তমানে এ উপজেলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে বাড়িঘর বিক্রি করে এলাকা ছাড়ার চিন্তাভাবনা করছে। রাজনগর উপজেলার মুন্সীবাজার, কামারচাক, টেংরাবাজার ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রাম পরিদর্শন করে জানা যায়, বিএনপি সন্ত্রাসী সুজা, কায়েস, বরকত ও ভুলুর নেতৃত্বে নির্বাচনের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হচ্ছে। মুন্সীবাজারের অমর ঘোষ, দুর্গা দেব, প্রফুল্ল বৈদ্য, অরুণ দেব, সাধন দেব, মতি দাস, বিধু দাস,অনীল শব্দকর, রসময় বৈদ্যের দোকানপাট লুট করা হয়েছে। মশুরিয়া গ্রামের চিত্ত শীলের বাড়িতে হামলা করে তার ঘর-দোর ভাংচুর করেছে। তার দু’টি গরু জোর করে নিয়ে গেছে। নন্দীউড়া গ্রামের নকুল সেনের বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। তারা মন্দিরে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে । এমনকি সন্ত্রাসীরা হামলার পর মন্দিরঘর থেকে লক্ষ্মীর মূর্তিও নিয়ে গেছে। টেংরা ইউনিয়নের মথিউরা চা বাগানের শ্রমিক নেতা ইউপি মেম্বার রামলাল রাজভর ও বাগানের চা শ্রমিক গণেশ, মালন, বর্মার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তারা বর্তমানে ভয়ে টেংরাবাজারে যেতে পারছে না। চা শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না, তাদের মারধর করা হচ্ছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়নের খলাগ্রামের রসময় ও অনীল নামের দুই ব্যক্তির পরিবারের লোকজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ধারণা করছেন তারা ভয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন আবার অনেকেই ধারণা করছেন তারা সিলেট শহরে আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। মুন্সীবাজারের সৎ নারায়ণ তেলি ও প্রেমনগর বাগানের সজল তেলিকে মারধর করা হয়। এ অবস্থা কামারচাক, রাজনগর ইউনিয়নের অধিকাংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায়।

দৈনিক জনকন্ঠ, ১৬ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন