নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার অনেক গ্রামেই হামলার কারণে যারা ঘরবাড়ি ছেড়েছিলেন তাদের অনেকে এখনো ফিরে আসেননি। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার কালীগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, যারা হামলার শিকার হয়েছেন তারা মুখ খুলতে কোন মতেই রাজি নন। নির্বাচন পূর্ব মারামারির ঘটনায় বেথুলি গ্রামের অসিতের সগুমিল ভেঙে দেওয়া হয়। ভাই অশোককে কুপিয়ে জখম করা হয়। নির্বাচনের পর থেকেই অসিত ও তার আরো দুই ভাই গ্রামছাড়া। এর মধ্য অসিতকে বাধ্য করা হয়েছে মামলা তুলে নিতে। মঙ্গলবার দুপুরে বেথুলি গ্রামে অসিতদের বাড়িতে গেলে দেখা যায় ঘরগুলোতে বাইরে থেকে তালা লটকানো। এক ঘরে বৃদ্ধা শাশুড়ি নির্মলাসহ দুই পুত্রবধু। বাড়িতে আর কেউ নেই । অসিতের মা নির্মলা কেঁদে কেঁদে ছেলেদের উপর অত্যাচারের কাহিনী শোনালেন। বললেন, বাবারা তোমরা নাম লিখছ, ছবি তুলে নিচ্ছো, আমাদের আবার কোন অসুবিধা হবে নাতো ? শিবনগর গ্রামের কার্তিকের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। মল্লিকপুর গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সন্ত্রাসীরা মঙ্গলবার সকালে একটি তাল গাছ কেটে নিয়ে গেছে। কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের ঋষিপাড়ায় মা-মেয়ের সম্ভ্রম লুটে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জের একটি এনজিও অনুসন্ধান করে তার সত্যতা খুঁজে পেয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রথম আলো, ১৮অক্টোবর ২০০১