কিশোরগঞ্জের নিকলীতে মাদ্রসাছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে নিকলী থানা পুলিশ। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশের সব বিদ্যালয় যখন বন্ধ এ সময় মাদ্রাসা খোলা রেখে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
১৮ মার্চ বুধবার রাতে নিকলী উপজেলার রোদার পড্ডু দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে।
এ মাদ্রসায় নুরানী বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র শেখ জুবায়ের হোসাইনকে (৮) পিটিয়ে জখম ও হাতের তিনটি আঙুল ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করেছিল ছাত্র জুবায়েরকে নির্যাতনকারী শিক্ষক মৌলভী বদরুল আমিন (৩৫)।
এরই মধ্যে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসাটি খোলা রাখার বিষয়টি জেনে ১৯ মার্চ বৃহস্পতিবার নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাসসুদ্দিন মুন্না মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দেন।
শিশুটির বাবা মুশায়িদ জানান, মাদ্রাসা বন্ধে শিশু জুবায়ের উপজেলার কামালপুর গ্রামে নিজ বাড়ি যায়। তার মা গোসল করাতে নিলে ছেলের সাড়া শরীরে বেধড়ক মারে রক্ত জমাটের চিহ্ন দেখতে পান। শিশু জুবায়ের শিক্ষকের ভয়ে কিছু বলতে চায়নি। অবশেষে মায়ের কাছে সব খুলে বলার পর বাবা মুশায়িদ মাদ্রাসায় বিচার চাইতে গেলে অনেক তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হন বলে তিনি জানান।
২০ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা মুশায়িদ ছেলেকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শিশু জুবায়ের এর শরীরে জখমের চিহ্ন দেখে ইউএনও থানায় মামলা করতে বলেন। রাতেই মুশায়িদ বাদী হয়ে মৌলভী বদরুল আমিনকে আসামি করে নিকলী থানায় একটি মামলা করেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হতে থাকলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে এবং বিষটি নিষ্পত্তির জন্য জোর তৎপরতা চলায় কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি শিক্ষকের।
নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামছুল আলম সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ২১ মার্চ শনিবার নিকলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজিৎ কুমার সরকার ফোর্স নিয়ে, বদরুল আমিনের নিজ বাড়ি নেত্রকোণার মদন উপজেলার দেউ সহলিয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।