কুমিল্লার (বরুড়া) নির্বাচনী এলাকায় গতকাল রোববার পৃথক দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ২ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। হতাহতরা আওয়ামী লীগের কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। বেলা সাড়ে বারোটায় বরুড়ার খরুয়া গ্রামের একটি হিন্দুবাড়িতে বোমা বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই মদন মোহন ভৌমিক (৪৫) ও হরিশ চন্দ্র ভৌমিক (৩৫) নামে দু’ব্যক্তি নিহত হয়। এলাকাবাসী জানায়, বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড়ের কাছে এ দুজন বসা অবস্থায় দূর থেকে তাদের লক্ষ্য করে বোমা মেরে কিছু দুস্কৃতকারী পালিয়ে যায়। এদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় বরুড়ার পুরাতন কাদবা গ্রামে আ. লীগ নেতা মমতাজ মিয়ার বাড়িতে লোকজন ভাত খাওয়ার সময় বোমা বিস্ফোরিত হলে মমতাজ মিয়া ও তার কণ্যাসহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের বরুড়া কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আওয়ামী
লীগ উল্লিখিত দুটি বোমা হামলার ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছে।

শনিবার রাতে নরসিংদী-২ পলাশ নির্বাচনী ৫০টি সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা, লুট ও বিএনপি প্রার্থী এলাকার জিনারদি ও গজারিয়া ইউনিয়নে ৫টি আ. লীগ ও ৩টি বিএনটির নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরসহ প্রায় ৫০টি সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা, লুট ও বিএনপি ড. মঈন খানের বাড়িতে গুলি করার অপরাধে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রাত ৮টার দিকে মাইক্রোবাস এবং হলার ভ্যানে করে বেশকিছু লোক হকিস্টিকআগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ব্যাপক ককটেল ও গুলির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা চরণগরদি, পারুলিয়া ও গজারিয়া রাস্তার পাশে প্রায় অফিসই ভাঙচুর করে। এ সময় হামলাকারীরা উত্তর চন্দনে প্রায় ৫০টি সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও আংশিক লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরে রাত ১০টার দিকে আ. লীগ সমর্থিতরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপির ৩টি অফিস ভাঙচুর করে এবং চরণগরদি বিএনপি প্রার্থী ড. মঈন খানের বাড়ির সামনে একটি অফিস ভাঙচুর করার সময় জনগণ আ. লীগ কর্মীকে মোটর সাইকেলসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এদিকে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) নির্বাচনী এলাকার খিদিরপুর ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার সংখ্যালঘু ভোটারকে চার দলীয় ঐক্যজোট ও শিবির কর্মীরা হত্যা এবং এলাকা ছাড়ার হুমকি দিলে আ. লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে প্রায় দুঘন্টা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে প্রাণের ভয়ে বেশকিছু সংখ্যালঘু পরিবার ঘরে তালা ঝুলিয়ে চলে গেছে।

নৌকায় ভোট দিলে হাত-পায়ের ‘রগ’ কেটে ফেলা হবে। বাসা বাড়িতে আগুন দেয়া হবে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হবে, এ ধরনের হুমকি গতরাত থেকে পটুয়াখালীতে শুরু হয়ে গেছে। ভুক্তভোগীরা হুমকিদাতাদের নাম প্রকাশে সাহস পাচ্ছে না। তারা বলছেন, প্রশাসনের লোকেরা নাম প্রকাশ করে দেয় তাই তাদের কাছে আবেদন করতে সাহস হয় না। মূলত প্রশাসনের বিভিন্ন মহলও জানে পটুয়াখালী শহরে কারা এ ধরনের দুঃসাহসিক কাণ্ড ঘটাতে পারে।

সংবাদ, ১ অক্টোবর ২০০১
কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন

মন্তব্য করুন