বিএনপির ডাকা হরতালে ৫ মার্চ মঙ্গলবার সকালে খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের রজকপাড়ায় হিন্দুসম্প্রদায়ের ১০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, আরও কিছু বাড়িঘরসহ আমাদী বাজারের ২০টির বেশি দোকানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

 

ক্ষতিগ্রস্ত ওই সব পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হরতালের সমর্থনে একাধিক মিছিল এসে চাঁদালী সেতুর কাছে সমবেত হয়। সেখান থেকে কয়েক শ লোক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে আমাদী বাজারে গিয়ে খোলা বা বন্ধ দোকানে নির্বিচারে ভাঙচুর শুরু করে। ২০টির বেশি দোকানঘর ভাঙচুর ও উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমানের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার পর বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ এক হয়ে হামলাকারীদের তাড়া করে। হরতালের সমর্থকেরা পিছু হটে বাজারের পাশে রজকপাড়ায় ঢুকে অমিয় দাস, অপূর্ব দাস, সুবোধ দাস, কার্তিক দাস ও সোনা দাসের পূজার ঘরসহ মোট ১০টি বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

ওই সময় হামলাকারীরা বাড়িঘরে থাকা বিভিন্ন বয়সী নারীদের মারধর করে যে যার মতো মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। এলাকার লোকজন হামলাকারীদের মধ্যে আবু সাঈদ (২২) ও লিটন গাজীকে (১৮) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এ ছাড়া, উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে হরতালের সমর্থকেরা সাতহালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জানালা-দরজা ভাঙচুর করেছে। ওই গ্রামের আবুল কালাম, আবদুস ছাত্তার ও গফফার সরদারের বাড়ি ভাঙচুর করার খবরও পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে।

আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমির আলী বলেন, হরতালের সমর্থক বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা মিছিল করে আমাদী বাজারে অসংখ্য দোকান ভাঙচুর করেছে। তারপর সেখান থেকে হিন্দুদের রজকপাড়ায় (ধোপা) বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে লুটপাট করেছে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, হরতালকারীরা মিছিল নিয়ে আমাদী বাজারে সাত-আটটি দোকান ভাঙচুর করে। সেখানে জনগণের প্রতিরোধের পর তারা ফিরে যাওয়ার সময় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে আগুন দেয়। আগুনে দুটি বসতঘর, দুটি রান্নাঘর ও পূজার একটি ঘর পুড়ে গেছে।

প্রথম আলো

মন্তব্য করুন