জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও বেসরকারি নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থীসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি’র চার সন্দেহভাজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাতে তাদের শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বোমা তৈরির বিস্ফোরক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (৭ নভেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে আলাদা তিনটি মামলা হয়েছে।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল বাতেন শনিবার দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো–গোপালগঞ্জের মকসুদপুর উপজেলার তরশ্রীরামপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম (২৫), টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার জগতপোড়া গ্রামের খন্দকার গোলাম সারোয়ারের ছেলে জাকারিয়া জামিল (৩১), ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চকশ্যামরামপুরের আবদুর রহমানের ছেলে আতিকুর রহমান (২৮) এবং একই এলাকার আবদুল হামিকের ছেলে আবু সাঈদ (৩২)।
পুলিশ জানায়, তানভীর আহম্মেদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিভাগের শিক্ষার্থী। গত জানুয়ারিতে আশুলিয়ায় বর্তমান বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বই, ইলেকট্রনিক ও ড্রোন তৈরির সরঞ্জামসহ তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অপর দিকে গ্রেফতার আতিকুর রহমান নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি
বিভাগের ছাত্র।
বগুড়া ডিবি’র পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক জানান, নব্য জেএমবির সদস্যরা নাশকতার পরিকল্পনা করতে শুক্রবার রাতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা এলাকায় সমবেত হচ্ছে এমন খবর পাওয়া যায়। রাত পৌনে ২টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তানভীর আহম্মেদ ওরফে আবু ইব্রাহিম, জাকারিয়া জামিল, আতিকুর রহমান ও আবু সাঈদকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছে বিদেশে তৈরি ৭.৬৫ ক্যালিবারের একটি পিস্তল, দু’টি গুলি ভর্তি একটি ম্যাগজিন, দেশীয় একটি ওয়ান শুটার গান, দু’টি কার্তুজ, তিনটি বার্মিজ চাকু, একটি চাপাতি, এক কেজি বিস্ফোরক, দুটি লাল টেপ, চারটি ব্যাটারি ও কিছু পরিমাণ তার পাওয়া যায়।
আবদুর রাজ্জাক আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা নিজেদের নব্য জেএমবির সক্রিয় কর্মী বলে স্বীকার করে।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল বাতেন বলেন, “বগুড়া তথা উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো জঙ্গিদের জন্য উর্বর এলাকা। গ্রেফতার জঙ্গিরা মূলত নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে সমাবেত হয়। কর্মী সংগ্রহ ও পরবর্তী নাশকতার পরিকল্পনা তাদের উদ্দেশ্য ছিল। জঙ্গিরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে নয়; ভুল আইডোলজির কারণে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন।”