বরগুনা-২ আসনে বিএনপি কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হইয়াছে পাথরঘাটা এলাকার ১০টি সংখ্যালঘু পরিবার। ধর্ষিতা হইয়াছে এক কিশোরী। সংখ্যালঘুদের অপরাধ তাহারা আওয়ামী লীগের ও জাতীয় পার্টির সমর্থক। তাহারা নৌকায় ও বাই সাইকেলে ভোট দিয়াছে। শুধু সংখ্যালঘুরা নয়, পাথরঘাটার চরদুয়ানী, কাঁঠালতলী, নাচনাপাড়া, রায়হানপুর, কাকচিড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নৌকা ও বাই সাইকেলের প্রতীকের সমর্থকদের মারধর করা হইয়াছে। কাঁঠালতলী ইউনিয়নের পরীকাটা গ্রামের মানমণ্ডল, রায়হানপুর গ্রামের গুনধর মিস্ত্রীর ছেলে গৌতম মিস্ত্রী, সূর্য মালাকারের ছেলে পঙ্কজ মালাকার, রসিক চক্রবর্তীর ছেলে রতন চক্রবর্তী, সুরেন হালদারের ছেলে সুশান্ত, সখানাথ বেপারীর ছেলে রিপন, উত্তর কাকচিড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নরেশ হালদার, কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকচর দোয়ানী গ্রামের সুজন বেপারী, চরদোয়ানী ইউনিয়নের হোগলাপাশা গ্রামের নারায়ণের ছেলে অমলকে মারধর করা হয়। চরলাঠিমারা গ্রামের সতীশ হালদারের বাড়িতে গভীর রাতে তাহার পুত্রবধূর সন্ধান জানিতে যায় এক যুবক। ৬ অক্টোবর হোগলাপাশা গ্রামে কিশোরী ধর্ষণকারীরা ঘুরিয়া বেড়াইতেছে প্রকাশ্যে। সরেজমিনে গিয়া সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের সত্যতা মিলিয়াছে। ইউপি চেয়ারম্যান, আইনজীবী, সমাজকর্মী, গ্রামবাসীদের সহিত আলাপ করিয়া নির্বাচনপরবর্তী নির্যাতন ও ধর্ষণের সত্যতা মিলিয়াছে। ধর্ষিতা কিশোরী ও মামলার বাদিনী তাহার বোন জানায়, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণের সময় তাহাদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। জবানবন্দী সঠিক ভাবে লেখা হয় নাই বলিয়া তাহারা সন্দেহ করিতেছে। ধর্ষক ও তাহাদের আত্মীয়-স্বজনরা ধর্ষিতা ও তাহার বোনকে হুমকি দিয়া যাইতেছে। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য এবং কেন্দ্রীয় নেতা জিয়াউদ্দিন তারেক আলী ১৫ অক্টোবর পাথরঘাটা আসেন এবং স্থানীয় প্রশাসনসহ নির্যাতিত ও গ্রামবাসীদের সহিত কথা বলেন। স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মজিবুর রহমান, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি এডভোকেট নুরুল ইসলাম, সমাজ সেবক ও যুবলীগ নেতা শহীদ আকন্দ বলেন, নির্বাচনের পর কেবল হিন্দু নয় বিএনপির বিরুদ্ধে যারা কাজ করিয়াছে তাহাদের উপর নির্যাতন করা হইতেছে। নির্যাতিত হইয়া অনেকে মামলা করিতে বা মুখ খুলিতে পারিতেছে না।

দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ অক্টোবর ২০০১

মন্তব্য করুন