বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মসজিদ উন্নয়নের চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সমাজপতিদের বিরুদ্ধে ৯টি পরিবারকে সমাচ্যূত করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে এ সব পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি কোরবানির মাংস। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের মরিচতলা গ্রামে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন আগে ১৬৫টি পরিবার নিয়ে গঠন করা হয় মজিতলা গ্রামের একটি সমাজ। প্রতিবছর ওই সমাজের সমাজপতিরা কোরবানির মাংস সমাজবদ্ধ পরিবারের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন। এ অবস্থায় প্রায় তিন বছর আগে গ্রামের একটি জামে মসজিদ উন্নয়নের জন্য সমাজের সব পরিবারের নামে সামর্থ অনুযায়ী চাঁদা ধরা হয়। এর মধ্যে ৩২টি পরিবার সমাজপতিদের কথামত চাঁদার টাকা দিতে না পারায় সমাজ থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়।

এ কারণে দুই বছর ধরে ৩২টি পরিবার সমাজ থেকে কোরবানির মাংস পায়নি। এ বছর ২৩টি পরিবার ওই গ্রামের অন্যান্য সমাজভুক্ত হয়েছে। কিন্ত ৯টি পরিবারের কোন সমাজে স্থান হয়নি। ফলে এবছর জাহাঙ্গীর আলম, ফটিক সরকার, বাবু মিয়া, সৌবার আলী, বেহুলা বেওয়া, আবুল কালাম, শহিদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ও হেলাল উদ্দিনের পরিবারের ৩৫ জন সদস্যর পেটে যায়নি কোরবানির এক টুকরো মাংস।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী বেহুলা বেওয়া জানায়, আমরা গরিব মানুষ। সমাজের মাতব্বররা মসজিদের নামে যে টাকা চাঁদা চায় আমরা তা দিতে পারি না। অল্প টাকা দিতে গেলে সমাজের মাতবররা তা নেয় না। এই ঘটনা নিয়ে তারা আমাদের ৯টি পরিবারে কোরবানির মাংস দেয় নাই।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি মাসজিদের চাঁদা দিয়েছি। গরিবদের নিয়ে প্রতিবাদ করায় এবছর তারা আমাকেও মাংস দেয়নি।

এছাড়া সামাজচ্যূত অন্যান্য পরিবারগুলো জানায়, এবার কোরবানির ঈদের আগে সমাজে ফেরার জন্য মাতব্বদের হাত-পা ধরেছেন। কিন্তু তারা কোনো কথা শুনেননি।

ওই সমাজের প্রধান মাতুব্বর মাসুদ সরকার বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে মসজিদ উন্নয়নের চাঁদার টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করে ৩২টি পরিবার সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরে তারা নিজেরাই একটি সমাজ করে সেখানে পশু কোরবানি করে। এবছর তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ হওয়ায় অনেকে বিভিন্ন সমাজে গিয়েছে। তবে ওই ৯ পরিবার কোরবানির মাংস না পাওয়ার বিষয়ে আমার জানা নেই।

উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, মরিচতলা গ্রামের ৯ পরিবারের সমাচ্যুতর বিষয়টি আগে জানা ছিল না। তবে ঈদের দিন খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই গ্রামের মাতবরদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমাজে ফিরে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

ধুনট থানার এসআই আব্দুস ছালাম বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসা করার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। স্থানীয়ভাবে সমঝোতা না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন