উম্মাহাতুল মোকমেনিন আদর্শ মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মাওলানা আবুল মনসুর (৫৫)। এলাকায় ‘হুজুর’ বলেই ব্যাপক পরিচিত। তিনিই কিনা মাদরাসার এক শিক্ষার্থীকে (১৪) ‘ধর্ম মেয়ে’ বানিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন!
১১ ডিসেম্বর শুক্রবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে মেয়ের পরিবারের লোকজন বিচার চাইতে গেলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা এলাকায়।
স্থানীয় সুত্র জানায়, অভিযুক্ত আবুল মনসুর উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামের মো. বছির উদ্দিনের ছেলে। গত প্রায় ১০ বছর আগে তিনি পাশের উচাখিলা বাজারের জমি ক্রয় করে বাড়ি করেন। বাসার সামনেই গড়ে তোলেন মাদরাসা। কোরআন শিক্ষার পাশপাশি একাধিক শিক্ষক রেখে তিনি এখানে কোচিং ব্যবসাও করেন। এলাকার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী মাদরাসাটিতে পড়াশোনা করে।
জানা যায়, আবুল মনসুর এলাকাতেই দুটি বিয়ে করেছেন। দুই স্ত্রীও এক সঙ্গে বসবাস করেন। এ অবস্থায় পাশের একটি গ্রামের কিশোরীকে ‘ধর্ম মেয়ে’ বানিয়ে ওই বাড়িতে আসা-যাওয়া করান নিয়মিত। একপর্যায়ে ওই কিশোরীর পরিবারকে রাজি করিয়ে নিজ খরচে মাদরাসায় রেখেই পড়াশোনা করানোর দায়িত্ব নেন। এর মধ্যে তার কু-মতলবের কারণে কিশোরী তার (হুজুর) কাছ থেকে চলে যায় বাড়িতে। বেশ কয়েকদিন আর মাদরাসায় আসেনি।
কিশোরীর মা জানান, তাঁর মেয়ে আর মাদরাসায় যাবে না বলে মন খারাপ করে থাকে। আর কোনো কিছুই বলে না। এ অবস্থায় একদিন হুজুর বাড়িতে এসে অনেক হাদিসের কথা বলে ফের মেয়েকে নিয়ে যায়। মাসখানেক পরে মেয়ে আবার বাড়িতে চলে এসে জানায়, বিভিন্ন শপথ করে হুজুর তার সঙ্গে ‘স্বামী-স্ত্রীর মতো ব্যবহার’ করছে এবং প্রতিবাদ করায় বিয়ে করবে বলে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে গত শুক্রবার হুজুরকে ডেকে আনা হয় এবং তাঁর উপস্থিতিতে ‘হুজুর কর্তৃক দিনের পর দিন ধর্ষণ’-এর বর্ণনা দেয় কিশোরী।
চেয়ারম্যান মোতব্বিরুল ইসলাম জানান, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা মেলে হুজুরের জবানবন্দি থেকেই। কারণ তিনিই ঘটনার জন্য বেশ কয়েকবার ক্ষমা চেয়েছেন। পরে মেয়ের পরিবারকে বলেছেন থানায় যেতে।