রাজবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের নির্দেশে এক শিশুকে তার তিন সহপাঠী বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত শিক্ষককেও আটকের চেষ্টা চলছে।

 

আহত রাফি (৭) রাজবাড়ী শহরের সিরাজুম মুনীর মাদ্রাসার নুরানি শ্রেণির ছাত্র। বর্তমানে সে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সে রাজবাড়ী পৌর এলাকার সজ্জনকান্দা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় ২৮ নভেম্বর  বৃহস্পতিবার রাফির মা মৌসুমী বেগম সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক আলী হাসান। মারধরে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী হলো- হাবিব (১৩), নাফিজ (১১) ও বায়োজিদ (১১)।

২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাফির শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সে জানায়, বুধবার সকালে মাদ্রাসায় ঘুমের বিরতির সময় সে বিছানায় শুয়েছিল। তখন তার সহপাঠীরা শিক্ষক আলী হাসানের কাছে গিয়ে নালিশ করে যে, রাফি জেগে আছে। এ কথা শুনে আলী হাসান রাফিকে পেটানোর নির্দেশ দেন। এরপর তার তিন সহপাঠী গিয়ে একজন কম্বল দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে ও একজন পা চেপে ধরে এবং একজন ঝাড়ূ দিয়ে তার শরীরে অনেকক্ষণ ধরে পেটায়।

রাফির মা জানান, গত আগস্টে তার ছেলেকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। মাদ্রাসাটি আবাসিক। কিছুদিন আগেও রাফিকে মেরেছিলেন শিক্ষক আলী হাসান। তার মাথায় এখনও ফোলা আছে।২৭ নভেম্বর বুধবার দুপুরে তিনি রাফিকে ভাত খাওয়াতে মাদ্রাসায় যান। ওই সময় রাফি তাকে মারধরের কথা জানায়। তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে জানান। অধ্যক্ষ অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে ডেকে বেত্রাঘাত করেন। দুপুরের খাবারের পর রাফি দু’বার বমি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিকেলে রাফিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহীন, শ্রেণি শিক্ষক আলী হাসান ও তিন সহপাঠীর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় অভিযোগ করেছেন। তিনি তার শিশু সন্তানের ওপর নির্যাতনের বিচার দাবি করেন।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আলী হাসান জানান, এটা তেমন বড় বিষয় নয়। বাচ্চারা নিজেরা মারামারি করেছে। ওই সময় তিনি অন্য কক্ষে ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। ক’দিন আগেও তিনি শিশুটিকে মেরেছিলেন কি-না প্রশ্ন করা হলে বলেন, ওটা শাসনের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। ওই ঘটনার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহীনের মোবাইল ফোনে বহুবার কল দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

সমকাল

মন্তব্য করুন